হাজরোর ছাত্রদের উচ্চশিক্ষা যেন শুধু স্বপ্ন

পাকিস্তানের পাঞ্জাবে অবস্থিত ছোট শহর হাজরো। যেখানে শত শত ছেলেদের উচ্চশিক্ষার বিষয়টি স্বপ্নই রয়ে গেছে। হাজরোতে শুধু ছেলেদের জন্য একটি মাত্র কলেজ রয়েছে। কাগজে কলমে ৪০০ জনের মতো ছাত্র বর্তমানে কলেজে নথিভুক্ত আছে। এই কলেজে কোন অধ্যক্ষ নেই। মাত্র তিনজন প্রভাষক এই ৪০০ জন ছাত্রের প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। এছাড়া একাডেমিক অসুবিধার কারনে আরো ৮০০ ছাত্র কলেজ ছেড়ে চলে গেছে।

কলেজের ফটক

এলাকার যুবকদের উন্নত শিক্ষার সুবিধা প্রদানের জন্য তিন বছর আগে, সাতজন প্রভাষক এবং একজন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তখন কলেজে ১৮০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তালিকাভুক্ত ছিল।

এদের মধ্যে চারজন প্রভাষক পিটিআই সরকারের প্রভাব খাটিয়ে নিজ নিজ শহরের কাছে তাদের পছন্দের কলেজে বদলি হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পরে শিক্ষা বিভাগ কলেজ টিচিং ইন্টার্নের (সিটিআই) মাধ্যমে অ্যাড-হক লেকচারার নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ২০২২ সালের নভেম্বরে শিক্ষা বিভাগের তহবিল স্বল্পতার কারণে তাদেরকেও চলে যেতে হয়েছে।

দানিশ আলী নামের এক শিক্ষার্থী জানান, গত শিক্ষাবর্ষে কলেজে প্রভাষক ছিল চারজন; এছাড়া কলেজে বিপুল সংখ্যক শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষক থাকায় অনেক শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়। গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রশিক্ষকের চুক্তি শেষ হলে তারা চলে যায়। সে সময় চারজন প্রভাষকও বদলি হয়ে অন্য কলেজ চলে যান। এছাড়া অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী প্রাইভেট কলেজের ফি বহন করতে না পেরে কলেজ ছেড়ে চলে গেছে।

স্থানীয় একটি এনজিও ছাছ মুহাফিজ কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নিসার আলী খান বলেন, তারা বিষয়টি জেলা প্রশাসক, প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন বিশেষ সহকারী মালিক আমিন আসলাম এবং প্রাদেশিক পরিষদের স্থানীয় সদস্য জাহাঙ্গীর খানজাদার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু সবই নিষ্ফল। কেউ কলেজের বিষয়টি সুরাহা করেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (অব.) চাঙ্গাইজ খান কলেজের ঘটনাকে ‘দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনি কলেজের প্রাচীর পুনর্নির্মাণের জন্য তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (এসই) রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের সাথে দেখা করেছিলেন। কলেজের কর্মী সংকটের ব্যপারে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করেছিলেন। কিন্তু তারা তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখেননি।

কলেজের পরিচালক আরশাদ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কলেজের দুঃখজনক অবস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।