জার্মানি সফরে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেন এরদোয়ান

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১৭ নভেম্বর, শুক্রবার জার্মানি সফরে যান। তিনি রাজধানী বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় বন্ধ করতে জরুরি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ

এরদোয়ান বলেছেন, ‘ইহুদিদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ তোরাহতে শিশু ও হাসপাতালে হামলার কথা বলা হয়নি। আপনি এটা করতে পারেন না। নারী, শিশু এবং বৃদ্ধসহ এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি এই যুদ্ধে নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে প্রায় পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংস হয়ে গেছে।'  

তিনি গির্জাগুলোতে হামলার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য পশ্চিমা খ্রিস্টান নেতাদের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘ইসরায়েল কি হাসপাতাল, উপাসনালয় এবং গীর্জাকে টার্গেট করে? হ্যাঁ, তারা এটা করে থাকে। আমি একজন মুসলিম হিসাবে, এতে ক্ষুব্ধ হয়েছি।' 

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘জার্মানি হলোকাস্টের জন্য ইহুদিদের কাছে দায়গ্রস্ত। কিন্তু তুরস্ক তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করেনি, তাদের কখনও ঘৃণা করেনি। তাই আমরা ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ এবং সমালোচনাকে স্বাধীনভাবে বলতে পারি।' 

এরদোয়ান গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, ‘তুরস্ক এবং জার্মানির গাজায় একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা উচিত। এই অঞ্চলে সংকট ছড়িয়ে পড়া রোধ করার একমাত্র উপায় এটি। আমাদের প্রত্যেকের উচিত যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া।' 

তিনি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি প্রমাণ করেছে এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অনিবার্য। তুর্কি হিসাবে, আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে।' 

এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ বলেছেন, গাজায় বেসামরিক নিহতের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত। পাশাপাশি তিনি ইসরায়েলের প্রতি জার্মানির পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় একটি গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে ১২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। অপরদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি প্রাণ হারিয়েছে।

সূত্র: ডেইলি সাবাহ