আর্জেন্টিনার নয়া প্রেসিডেন্টের শক থেরাপি শুরু!

আর্জেন্টিনা সরকার জানিয়েছে, তারা মার্কিন ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রা পেসোর মূল্য ৫০ শতাংশেরও বেশি কমিয়ে দেবে। কয়েক দশকের মধ্যে দেশের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের অংশ হিসেবে দেশটির নতুন উগ্র-ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট এ ঘোষণা দেন। খবর আল জাজিরা।

হাভিয়ের মিলেই

গত মঙ্গলবার এ ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই বলেন, আর্জেন্টিনার বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে এটি প্রয়োজনীয় ছিল। গত রোববারই শপথ নিয়েছেন দেশটির নতুন এই প্রেসিডেন্ট। অবশ্য তিনি অনেক আগে থেকেই আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। এমনকি তিনি দেশের নিজস্ব কোনো মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা না রাখার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছিলেন। তার মতে, আর্জেন্টিনার অর্থনীতি এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে ধীরে ধীরে কোনো কিছু করার সময় নেই। যা করার খুব দ্রুতই করতে হবে।

এদিকে প্রেসিডেন্টের মুদ্রা অবমূল্যায়নের ঘোষণার পাশাপাশি দেশটির অর্থমন্ত্রী লুইস ক্যাপুটো আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভর্তুকির ব্যাপক কাটছাঁট, বেশ কিছু পাবলিক ওয়ার্ক প্রকল্পের দরপত্র বাতিল এবং নয়টি সরকারি মন্ত্রণালয়কে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা। তবে অর্থনৈতিক এ পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির সবচেয়ে দরিদ্রদের জন্য সামাজিক ব্যয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করেছে দেশটির নতুন সরকার।

ক্যাপুটো টেলিভিশনে দেওয়া তার ভাষণে বলেন, কয়েক মাস ধরে আমরা ক্রমেই আগের চেয়ে খারাপ হতে যাচ্ছি। এভাবে যদি আমরা চলতে থাকি, তাহলে আমরা অনিবার্যভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মুখে পড়ব। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তাদের এই পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেছে।

দেশটির অর্থনীতিবিদরা নতুন এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন, সর্বশেষ অবমূল্যায়নের ফলে ডলারের বিপরীতে পেসোর মূল্য ৪০০ থেকে ৮০০-তে নেমে আসবে। দেশের অবনতিশীল অর্থনীতিতে যারা সংগ্রাম করে আসছিল, তাদের জন্য এটি বড় একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা দেবে।

সরকারবিরোধী বামপন্থীরা বলছেন, সরকার সাইকোপ্যাথের মতো সবাইকে চরম বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারণ এখন সরকারি-বেসরকারি খাতের কর্মীসহ সবাই আগের বেতনে মাত্র অর্ধেক জিনিস কিনতে পারবে।

ঝুঁকি বিষয়ক পরামর্শক সংস্থা ভেরিস্ক ম্যাপলেক্রফ্টের প্রধান বিশ্লেষক জিমেনা ব্ল্যাঙ্কো বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই অর্থনৈতিক সংস্কারের যে ঘোষণা দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এরই মধ্যে ৪০ শতাংশ মূল্যস্ফীতিতে পৌঁছে যাওয়া একটি দেশে এটা ঠিক কতটুকু ফলপ্রসূ হবে বা কতদিন স্থায়ী রাখা যাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।