ইভ্যালির রাসেল-শামীমার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

প্রতারণার মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুজনের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়েছে।

ইভ্যালির এমডি রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালত আজ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বাদীপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

ইভ্যালির এক গ্রাহক মুজাহিদ হাসান ফাহিমের মামলায় আদালতের এ আদেশ এসেছে। ফাহিম ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ইভ্যালিতে ৫ লাখ টাকার একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেন এবং পুরো টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেন।

তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফাহিমকে মোটরসাইকেল দেওয়া হয়নি। পণ্য না পেয়ে ইভ্যালির ধানমন্ডি অফিসে যান ফাহিম। সেখান থেকে তাকে টাকার চেক দেওয়া হলেও ইভ্যালির অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা ছিল না। এরপরই মামলা করেন ফাহিম।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাকিবুল ইসলাম জানান, এ মামলায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরবর্তীকালে আসামিদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি এবং সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন জানাই আমরা। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন ইভ্যালির এমডি রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন। অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার মামলায় র‌্যাব ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমা দম্পতিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। সেসময় রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

আট মাস কারাবন্দি থাকার পর সবগুলো মামলায় জামিন নিয়ে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল কারামুক্ত হন শামীমা। আর ২০২৩সালের ১৯ ডিসেম্বর জামিনে ছাড়া পান তার স্বামী রাসেল।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইভ্যালির যাত্রা শুরুর পর মোটরসাইকেল, গাড়ি, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, আসবাবপত্র ও ওয়াশিং মেশিনের মতো অসংখ্য পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়া ফেলে দেয় অনলাইন মার্কেট ইভ্যালি।

‘প্রলোভনে’ পড়ে অনেকেই বিভিন্ন অংকের বিপুল টাকা অগ্রিম দিয়ে ইভ্যালিতে পণ্যের অর্ডার করেন। তবে মাসের পর মাস অপেক্ষায় থেকেও অনেকে পণ্য বুঝে পাননি আর অগ্রিম নেওয়া টাকা ফেরতও দেয়নি ইভ্যালি।

ক্রেতাদের ৫৪৩ কোটি টাকার দেনায় পড়ে ইভ্যালি। এক পর্যায়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে হাজার হাজার গ্রাহক বিক্ষোভে নামেন। সেই সময়  রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হয়; তারই একটি মামলার বাদী মোটরবাইক কিনতে যাওয়া ফাহিম।