সেই বেলফোরের ছবির ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন এক নারী

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বেলফোরের একটি প্রতিকৃতি (পেইন্টিং) কেটে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন ফিলিস্তিনপন্থী এক বিক্ষোভকারী। শুক্রবার প্রতিকৃতিটি কেটে ফেলার সময় ওই বিক্ষোভকারী বলেন, ১৯১৭ সালে বেলফোরের ঘোষণার কারণেই ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ড ইসরায়েলের কাছে হারিয়ে বসে। খবর রয়টার্স।

বেলফোরের ছবি কেটে নষ্ট করছেন এক নারী

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনি প্রতিবাদী গোষ্ঠী প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের দেওয়া একটি ভিডিও পোস্টে দেখা যায়, একজন নারী প্রথমে বেলফোরের বিশাল আকৃতির ছবিটিতে লাল রং দিয়ে স্প্রে করেন। পরে সেটাকে ছুরি দিয়ে বারবার আঘাত করেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, বেলফোরের ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে জাতিগত নির্মূল শুরু করে, যা করার অধিকার ব্রিটিশদের কখনই ছিল না। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বিক্ষোভ উত্তেজনার সর্বশেষ ঘটনা এটি। উল্লেখ্য, রাজা তৃতীয় চার্লস ও বেলফোর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।

১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য কথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ব্রিটেনের অবস্থানের কথা জানিয়ে ইহুদি নেতা লিওনেল ওয়াল্টার রথসচাইল্ডকে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি লেখেন। ৬৭ শব্দের এই সংক্ষিপ্ত চিঠিই বেলফোর ঘোষণা নামে পরিচিত, যাকে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের সূচনাবিন্দু হিসেবে গণ্য করা হয়।

বেলফোর ও কেমব্রিজ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৮) চলাকালে দেওয়া ওই ঘোষণা অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর বাস্তবায়ন করা হবে বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৭-৪৮ সালে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে যুদ্ধ, ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা এবং প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ তত্ত্বাবধান মর্মান্তিকভাবে শেষ হয়।

তখন থেকে অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের আবাসস্থল ক্রমশই সংকুচিত করে সীমানা বাড়িয়ে চলছে বিশ্বে একমাত্র ইহুদী দেশ ইসরায়েল।

সর্বশেষ গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত তাদের হামলায় নিহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আর আহতের সংখ্যা ৭০ হাজার, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।