ইরাকের কুর্দিস্তানে সাদ্দাম হোসেনের ‘মূর্তি’ নিয়ে বিতর্ক

ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের সুলাইমানিয়া শহরে স্থাপিত সাবেক ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের একটি মূর্তি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধীরা এই মূর্তি স্থাপনকে সাবেক এই স্বৈরশাসকের দ্বারা যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাদের জন্য অপমান  হিসেবে দেখছেন।

ছবি - সংগৃহীত

সুলাইমানিয়া শহরকে সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টির শাসন থেকে মুক্ত করার ৩৩তম বার্ষিকী স্মরণে চলতি বছর মূর্তিটি সুলায়মানিয়ার রেড সিকিউরিটি ন্যাশনাল মিউজিয়ামে স্থাপন করা হয়েছিল। এর পরেই মূর্তিটি নিয়ে বিতর্কের শুরু হয়। বিষয়টি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়ে যায়। অবশেষে যাদুঘর এবং শহরের কুর্দি কর্তৃপক্ষ মূর্তিটি সরাতে বাধ্য হয়।  

সমালোচকদের দাবি, এই মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে স্বৈরশাসক সাদ্দামের অন্যায় অবিচারের শিকারদের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে। তবে যাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মূর্তিটি অত্যাচারী শাসকের পতনের প্রতীক হিসেবে স্থাপন করা হয়েছিল।

সাদ্দাম হোসেনের এই মূর্তিটি ১৯৯৭ সালে কিরকুকের আরাফাত স্কোয়ারের কাছে স্থাপন করা হয়েছিল। তারপর ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সময় মূর্তিটি অপসারণ করা হয়েছিল। কুর্দি ফটোগ্রাফার ফায়েক হামাহ সালেহ মূর্তিটিকে সুলাইমানিয়া শহরে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এটিকে সাদ্দাম হোসেনের নির্যাতনের শিকারদের স্মরণে নির্মিত জাদুঘরে উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন।    

এদিকে কুর্দি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এবং কিছু পত্রিকার অভিযোগ ছিল যে ইরানের চাপের কারণে মূর্তিটি সরানো হয়েছে।  তবে কুর্দি কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে।   

উল্লেখ্য, ১৯৮৭ এবং ১৯৮৮ সালে, ইরাক-ইরান যুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সাদ্দাম হোসেন আনফালে কুর্দি গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে একটি বিশাল সামরিক অভিযান শুরু করেন। এর ফলে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। নিহতদের বেশিরভাগই নারী, শিশু এবং বয়স্ক মানুষ ছিল। এদের অনেককে ইরাকের দক্ষিণ মরুভূমি জুড়ে গণকবরে সমাহিত করা হয়েছিল।    

এছাড়া ১৯৮৮  সালের ১৬ মার্চ সাদ্দাম হোসেনের সরকার হালাবজা শহরে আক্রমণ করে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে।  ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর সাদ্দামের শাসনের পতন ঘটে।  ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে সাদ্দাম হোসেনকে বন্দী করা হয়। হালাবজা গণহত্যাসহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তিন বছর পরে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

সূত্র: দ্য নিউ আরব