গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানে নামাজ পড়ার কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মারধর!

ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে নামাজ আদায়ের কারণে হামলার শিকার হয়েছেন বিদেশি মুসলিম ছাত্ররা। শনিবার (১৬ মার্চ) তারাবিহর নামাজ আদায়ের সময় এ হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা

এনডিটিভি ও হিন্দুস্তানটাইমসের খবরে বলা হয়, শনিবার রাতে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ব্লক ‘এ’-তে এ ঘটনা ঘটে। সে সময় আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও উজবেকিস্তানের শিক্ষার্থীরা তারাবিহর নামাজ আদায় করছিলেন। তখনই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ক্যাম্পাসে কোনো মসজিদ নেই। তাই তারা হোস্টেলের ভেতরেই তারাবিহর নামাজ আদায় করছিলেন। সে সময় কিছু উচ্ছৃংখল লোকজন লাঠি ও ছুরি নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হোস্টেলের বেশ কয়েকটি কক্ষেও ভাঙচুর করা হয়। হোস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী ও অমুসলিম অন্য শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

হামলার শিকার এক বিদেশি শিক্ষার্থী জানান, রাত ১১টার দিকে আমরা নামাজ পড়ার সময় বাইরে থেকে ১০-১৫ জন লোক হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করে। তারা আমাদেরকে নামাজ আদায় করে নিষেধ করে এবং জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ভবনের নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এবং নামাজ আদায়রত ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। অন্যান্য অমুসলিম ছাত্ররা তাদের রক্ষার্থে এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। তাদের রুমে গিয়ে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। পরে হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের পাঁচটি বাইকও ভাঙচুর করে।

ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি রুমেও

হামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার দুজন এবং আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার একজন করে শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঘটনার শুরুতেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হামলাকারীরা হামলা, মারধর ও ভাংচুর করে চলে যাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এদিকে এই ঘটনার পর গুজরাটের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংহবি যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আহমেদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দমন) নীরজকুমার বদগুজর বলেছেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রধান ও হায়দরাবাদের পার্লামেন্টারিয়ান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি লেখেন, কী লজ্জার বিষয়! মুসলমানদের শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মচর্চা করতে দেখলেই আপনাদের ভক্তি ও ধর্মীয় স্লোগান চলে আসে।