পাকিস্তানের ওপর নির্ভরতা কমাচ্ছে আফগানিস্তান!

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ডলারের বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রস্তুত ইরানের চাবাহার বন্দর। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বিনিয়োগের এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে, যা পাকিস্তানি বন্দরগুলোর ওপর আফগানিস্তানের ঐতিহ্য পরম্পরা নির্ভরতা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পতাকা

আফগান ডায়াস্পরা লিখেছে, প্রতিবেশী পাকিস্তানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বাণিজ্যিক রুটকে বৈচিত্র্যময় করতে কৌশলগত পদক্ষেপ নিচ্ছে তালেবান সরকার। পাকিস্তান ও তালেবান সরকারের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে ইরানি বন্দরের দিকে ঝুঁকছে আফিগানিস্তান।

পাকিস্তানের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার ঝুঁকির কথা জানিয়ে তালেবানের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, “এমন একটি সংকটপূর্ণ এলাকায় আফগানিস্তানের বিষয়ে ব্যাপকভাবে জড়িত এমন একটি দেশের (পাকিস্তান) ওপর নির্ভর করা আফগানিস্তানের জন্য সঠিক বিষয় ছিল না।”

তালেবানের এই অনুভূতি তাদের অর্থনৈতিক লেনদেনে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ এবং চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে বিকল্প পথ খুঁজছে আফগানিস্তান। আঞ্চলিক বাণিজ্যে আফগানিস্তান নিজেকে আরো দৃঢ় খেলোয়াড় হিসেবে অবস্থান তৈরির সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতায় একটি কৌশলগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে।

পাকিস্তান আফগানিস্তানের প্রাথমিক ব্যবসায়ী অংশীদার। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কমতে দেখা গেছে এ দুটি দেশের। আফগানিস্তানের প্রাক্তন আইনজীবী মুশাহিদ হুসেইন সাঈদের অনুমান বলছে, দুই দেশের বাণিজ্য ৪০০ কোটি ডলার থেকে কমে ১০০ কোটি ডলারেরও নিচে নেমে এসেছে।

বিপরীতে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের বাণিজ্য বাড়ছে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব পুনর্নির্মাণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২০০২ সাল থেকে চাবাহার বন্দরে ভারতের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ এই অঞ্চলে দেশটির কৌশলগত স্বার্থের ওপর জোর দেয়।