আপনি পড়ছেন

রাজধানীজুড়ে রাস্তার দু’ধারে, অলি-গলিতে, মোড়ে মোড়ে হোটেল-রেস্তোরাঁর অভাব নেই। ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে ৪০ হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে। যদিও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির হিসাবে, রেস্তোরাঁ সংখ্যা এখন ২৭ হাজারের মতো। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এই ৪০ হাজার কিংবা ২৭ হাজার যেটিই হোক, তার মধ্যে বৈধ রেস্তোরাঁ মাত্র ১৩৪টি।

resturantঢাকায় অসংখ্য বুফে রেস্তোরাঁ গড়ে উঠলেও বেশির ভাগই অনুমোদনহীন

সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত গ্রিন কোজি কটেজ নামের একটি ভবনে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এসব অনুমোদনহীন রেস্তোরাঁর বিষয়টি সামনে এসেছে। ওই এক গ্রিন কোজি কটেজ ভবনেই ‘কাচ্চি ভাই’ বিরিয়ানিসহ আটটি রেস্তোরাঁ ছিল। অথচ রেস্তোরাঁ থাকার কোনো অনুমোদনই ছিল না ভবনে।

রেস্তোরাঁ মালিকদের দাবি, দেশে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসার জন্য নিবন্ধন ও লাইসেন্সপ্রক্রিয়া বেশ জটিল। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াতে দৌড়াতে অনেক হয়রানিও পোহাতে হয়। রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হলে সরকারের মোট সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁ করতে সবার আগে নিবন্ধন এবং পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে।

ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থা থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালাচ্ছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

দুই সিটির পাশাপাশি জেলা হিসেবে ঢাকায় উপজেলা রয়েছে পাঁচটি- ধামরাই, সাভার, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ। তথ্যমতে, এই পাঁচ উপজেলার মধ্যে শুধু সাভারে ৬টি রেস্তোরাঁর কাছে অনুমোদন-লাইসেন্স আছে।

ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০২২ সালে ঢাকায় ১১টি প্রতিষ্ঠান রেস্তোরাঁ লাইসেন্স নিয়েছে। ২০২৩ সালে ৩০টি প্রতিষ্ঠান এবং চলতি ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত রেস্তোরাঁ ব্যবসার লাইসেন্স নিয়েছে ১৫টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এখন আবেদন বিবেচনায় আছে ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের।

তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে ২০০১ সালে প্রথম লাইসেন্স নিয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসা শুরু করে কারওয়ান বাজারের ‘রেস্টুরেন্ট লা ভিঞ্চি’ । এরপর ২০০৩ সালে গিয়ে লাইসেন্স নেয় হোটেল সুপার স্টার রেস্টুরেন্ট। একই বছর ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেডের কেএফসি ও পিৎজাহাটের শাখাগুলো লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে।

বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইন অনুযায়ী, প্রথমেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় থেকে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করার নিবন্ধন বা অনুমোদনপত্র নিতে হয়। এরপর সেই নিবন্ধন দেখিয়ে সিটি করপোরেশন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। এরপরই ডিসি কার্যালয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে রেস্তোরাঁ ব্যবসার লাইসেন্স (সনদ) দেবে নিবন্ধন পাওয়া রেস্তোরাঁকে।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ম হচ্ছে নিবন্ধন পাওয়ার পর একজন বিনিয়োগকারী রেস্তোরাঁ নির্মাণ শুরু করবেন । এরপর সরকারি অন্যান্য সংস্থা থেকে অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিলেই লাইসেন্স পাবেন। লাইসেন্স পাওয়ার আগে কোনো রেস্তোরাঁ খাবার বিক্রি করতে পারবে না। যেসব রেস্তোরাঁর লাইসেন্স আছে, শুধু তারাই বৈধ।

লাইসেন্স ছাড়াই রেস্তোরাঁ ব্যবসার বিষয়টি আলোচনায় আসে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর। ওই ঘটনায় ৪৬ জনের প্রাণহানির পরই রাজধানীজুড়ে অভিযান শুরু করে পাঁচটি সরকারি সংস্থা—রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এসব সংস্থার ‘বিচ্ছিন্ন’ অভিযানে রেস্তোরাঁ সিলগালা ও ভেঙে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে, যা নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.