ঈদযাত্রায় ৩৯৯ দুর্ঘটনায় ৪০৭ জনের মৃত্যু

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সারাদেশে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০৭ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৯৮ জন। যাত্রী কল্যাণ সমিতি এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক

সংগঠনটি জানিয়েছে, মোট দুর্ঘটনার প্রায় অর্ধেকেরই সঙ্গে জড়িত মোটরসাইকেল। এই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত এবং ২৪০ জন আহত হয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গত ৪ থেকে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে সংঘটিত দুর্ঘটনা নিয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। প্রতিবেদনে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন মারা যান এবং ২১ জন আহত হন। নদীপথের দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু এবং পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গত ঈদুল ফিতরের তুলনায় এবার দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১ শতাংশ, মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ২৪ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ।

ছুটি বেশি থাকায় এবার বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সমিতি মন্তব্য করেছে। নিয়ন্ত্রণকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকলেও ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় ও হয়রানি চরম আকার ধারণ করেছে।

দুর্ঘটনার ধরন নিয়ে সমিতি বলছে, জাতীয় মহাসড়কে ৩২ শতাংশের বেশি এবং আঞ্চলিক মহাসড়কে ১০ শতাংশ দুর্ঘটনা घটেছে। বাকি ৫০ শতাংশ দুর্ঘটনার ঘটনাস্থল ফিডার রোড বা সংযোগ সড়ক।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আলো বাড়ানো এবং ডিজিটাল যানবাহন ফিটনেস পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করেছে সমিতি। এছাড়া, ধীরগতির ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেন, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং চালকদের কাজের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণেরও পরামর্শ দিয়েছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি তৌহিদুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুন্নেসা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক এবং আরো কয়েকজন পদধারী উপস্থিত ছিলেন।