পাল্টাপাল্টি হামলা, নতুন মাত্রায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ!

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। দুই পক্ষই একে অপরের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুই দেশের হামলার প্রধান লক্ষ্যই ছিল জ্বালানি অবকাঠামো। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি এই হামলায় বিশ্বে তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরা।

রাশিয়ায় হামলা চালায় ইউক্রেন

শনিবার ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানায়, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক, ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক ও লভিভ অঞ্চলের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়। এতে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে অন্তত চারটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিপুল এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। রাশিয়ার এ ধরনের হামলার ফলে ইউক্রেনের বহু এলাকায় ব্ল্যাকআউট বা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ছে। দিনকে দিন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো এক ফেসবুক পোস্টে জানান, শত্রু বাহিনী আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। অবশ্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার ৩৪টি ড্রোন হামলার ২১টিকেই ভূপাতিত করেছে।

রাশিয়ার হামলায় সৃষ্ট আগুন নেভাচ্ছে ইউক্রেনের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা

এদিকে নিজেদের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর প্রতিপক্ষের হামলার কথা জানানোর পাশাপাশি নিজেরাই রাশিয়ার তেল শোধনাগারকে লক্ষ্য করে হামলার কথা জানিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। তারা জানায়, শুক্রবার রাতে রাশিয়ার ক্রাসনোদর অঞ্চলের ইলস্কি ও স্লাভিয়ানস্ক তেল শোধনাগারগুলোতে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। এতে ওইসব স্থাপনায় আগুন ধরে যায় বলে জানা গেছে।

কিয়েভের কর্মকর্তারা জানান, মস্কোর এ ধরনের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তারাও রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও তেল শোধনাগারে হামলা চালানোকেও লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে।

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাসনোদার অঞ্চলের স্লাভিয়ানস্ক-অন-কুবান শহরের তেল শোধনাগারের কর্মকর্তা এডুয়ার্ড ট্রুটনেভ বলেন, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার পর শোধনাগারের আংশিকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তিনি জানান, এ স্থাপনায় কমপক্ষে ১০টি ড্রোন আঘাত হানে এবং বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

এদিকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার এ ধরনের পাল্টা-পাল্টি হামলায় বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে আশঙ্কা করছেন বিশ্ব নেতারা। এই পরিস্থিতি এড়াতে উভয় পক্ষকেই তারা এ ধরনের হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই তাদের এ আহ্বানে ভ্রুক্ষেপ করতে নারাজ।