ব্রাজিলে প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসে ৩৯ জনের মৃত্যু

কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ, হড়পা বান ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্রান্দে দো সুল। প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগে রাজ্যটিতে অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৭০ জন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

ব্রাজিলের একটি ভাঙা সড়ক

আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে অবস্থান ব্রাজিলের রিও গ্রান্দে দো সুল রাজ্যের। স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, গত সোমবার থেকে রাজ্যটিতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে সৃষ্ট হড়কা বান ও ভূমিধসে রাজ্যের ৪৯৭টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে এসব শহরের ২৪ হাজার মানুষ।

এ পর্যন্ত রাজ্যটিতে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে গভর্নর এদোয়ার্দো লেইতে শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, এটি সম্ভবত রাজ্যের রেকর্ড করা সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আমরা এখনও উপদ্রুত অনেক এলাকায় যেতে পারিনি। আগামী কয়েকদিনে আমরা সেখানে যেতে পারব বলে মনে করছি। তখন মৃত্যুর সংখ্যাও পরিবর্তন আসতে পারে।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত বৃষ্টিতে রিও গ্রান্দে দো সুলের বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু সেতু। লাগাতার ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের জলাধারের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। একই ধরনের ঝুঁকিতে আছে বেন্টো গনকালভস শহরের আরেকটি জলাধারও। এতে তিন লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন। কর্তৃপক্ষ এসব এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার করছে পুলিশ

এদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে পানির স্তরে বেড়ে যাওয়ায় রাজ্যের রাজধানী পোর্তো এলেগ্রের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া গুয়াইবা নদীর তীরে বেশ কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের রাস্তাঘাট। ফলে উদ্ধারকারীদের উদ্ধারকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা এরইমধ্যে হেলিকপ্টারে প্রদেশের বন্যাকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। পরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে এরইমধ্যে গভর্নর ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে আমরা এই দুর্যোগ পরিস্থিতির মোকাবেলা করব।