আপনি পড়ছেন

মুসলিম বিশ্বের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতেও যখন ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন চলছে, সে সময় তাদের প্রতি চরম অমানবিকতার পরিচয় দিয়ে চলছে প্রতিবেশী মিশরে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। অসহায় ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে যেনতেন প্রকারে অর্থ আদায়ই হয়ে উঠেছে তাদের প্রধান ধ্যানজ্ঞান।

rafah crossing 1রাফা সীমান্ত

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যুদ্ধ শুরু হলে আক্রান্ত দেশের লোকজন আশ্রয় নেয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে। সাম্প্রতিক ইউক্রেন তার বড় উদাহরণ। কিন্তু ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজাবাসীদের জন্য বিষয়টি অনেকটাই ভিন্ন। অবরুদ্ধ গাজাবাসীদের জন্য ফিলিস্তিন থেকে বের হতে একমাত্র ভরসা রাফা সীমান্ত। গাজা থেকে বের হতে হলে তাদেরকে রাফা ও মিশরের সিনাই মরুভূমির মধ্যবর্তী অংশ দিয়ে পার হতে হয়, যা সরাসরি মিশর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

ইসরায়েলি নজরদারি থাকায় এ সীমান্ত দিয়ে খুব বেশি ফিলিস্তিনির পক্ষে পার হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও যারা বের হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, তাদের কাছ থেকে আকাশচুম্বি ফি আদায় করছে মিশর তথা দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী টাইকুন ইব্রাহিম আল-অরগানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘হালা কনসাল্টিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস’। তারা মিশরে ঢুকতে চাওয়া প্রতি প্রাপ্তবয়স্ক ফিলিস্তিনিদের থেকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে আড়াই হাজার ডলার ফি আদায় করছে। অথচ যুদ্ধের আগে রাফা সীমান্ত দিয়ে গাজা থেকে বের হতে ফি লাগত জনপ্রতি ৩৫০ ডলার।

gaza refugeesউদ্বাস্তু গাজাবাসী

খবরে বলা হয়, গত তিন মাসে প্রতিষ্ঠানটি গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে ১১৮ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেছে। রাফার শরণার্থী শিবিরে হামলার আশঙ্কায় এপ্রিল মাসে ফিলিস্তিনিরা দেশত্যাগ করতে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে পোয়াবারো হয় হালা কনসাল্টিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস। এক মাসেই তাদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। তারা ১০ হাজার ১৩৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং দুই হাজার ৯১০ শিশুর কাছ থেকে কমপক্ষে ৫৮ মিলিয়ন ডলার ফি আদায় করেছে। দৈনিক গড়ে দুই মিলিয়ন ডলার আদায় করেছে, যা ছিল মার্চ মাসের দ্বিগুণ।

মিশর সরকার অবশ্য এত ফি আদায়ের অভিযোগ বরাবরের মতেই অস্বীকার করে আসছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি গত ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কেউ এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাস্তবতা হলো হালা কনসাল্টিং ফিলিস্তিনিদের থেকে অর্থ আদায় অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ফিলিস্তিনিরা মিশরে ঢোকার পরও ন্যূনতম কোনো উপকার পাচ্ছে না। চিকিৎসা, শিক্ষাসহ কোনো সুবিধাই তাদের দেওয়া হচ্ছে না। ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা তাদের সন্তানদের মিশরের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না। আহত বা অসুস্থ অবস্থায় মিশরের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে তারা বসবাসের জন্য বাড়ি ভাড়াও পাচ্ছেন না। কোনো কোনো বাড়িতে ‘নো ফিলিস্তিনি’ এমন সাইনবোর্ড টানানো হচ্ছে। এছাড়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। ফলে তাদের অনেকেই বিভিন্ন অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ছেন।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ফিলিস্তিনের ২৩ লাখ জনগণের ১৫ লাখের বেশি এখন উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে। তাদের মধ্যে এক লাখ ফিলিস্তিনি মিশরে সরে যেতে সক্ষম হয়েছে। আর বাকিরা গাজার ভেতরেই অভ্যন্তরীণ শরণার্থী হিসেবে দিন কাটাচ্ছেন।

মিডল ইস্ট মনিটর অবলম্বনে

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.