আপনি পড়ছেন

কয়েক বছর ধরে চীন-মার্কিন সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এর জেরে চীনের বহু পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাজার হাতছাড়া করতে চায় না বেইজিং। তাই সরাসরি না পারলেও অন্য দেশের ভায়া হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে যাচ্ছে দেশটি। খবর বিবিসি।

maxicobased china factoryমেক্সিকোতে চীনা কারখানা

ইউক্রেনের ওপর হামলার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। কিন্তু সেই তেল রাশিয়া ভারতের কাছে বিক্রি করে। ভারত সেটা পরিশোধন করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও কিছু বেশি দামে বিক্রি করে। রাশিয়ার সেই কৌশল অবলম্বন করছে চীনও। আর এর জন্য তারা বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম দেশ মেক্সিকোকে।

মেক্সিকোর বিভিন্ন কারখানায় বিভিন্ন পণ্য উৎপাদিত হয়ে ‘মেড ইন মেক্সিকো’ ট্যাগ লাগিয়ে চলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট ও কস্টকোর মত বড় বড় সব চেইন শপে। সেখান থেকে মার্কিনিরা কোনো ঝামেলা ছাড়াই সেসব পণ্য কিনতে পারছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যেসব কারখানায় এসব পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে সেসবের অধিকাংশ চীনা মালিকানাধীন। দিন দিন দেশটিতে এ ধরনের কারখানা বাড়ছে।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে নিজেদের ব্যবসা চলমান রাখতে চীনা কোম্পানিগুলো এখন বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে মেক্সিকোতে। আরও স্পষ্টভাবে বললে বলা যায়, তারা উত্তর মেক্সিকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থান নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের একেবারে কাছাকাছি এসে পণ্য উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছে। এতে একদিকে পরিবহণ খরচ অনেক কমে যাচ্ছে। তারচেয়ে বড় কথা হলো, এখানকার উৎপাদিত পণ্যের গায়ে লেখা থাকছে ‘মেড ইন মেক্সিকো’। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও উচ্চ কর উভয়টিই এড়ানো সম্ভব হচ্ছে চীনের পক্ষে।

chinese firms build factory in mexicoমেক্সিকোতে চীনা কারখানা বসানোর প্রতিযোগিতা লেগেছে

মেক্সিকোতে এমন একটি চীনা কোম্পানির নাম ‘ম্যান ওয়াহ’। তারা আসবাবপত্র তৈরি করে। ম্যান ওয়াহর জেনারেল ম্যানেজার ইয়ু কেন ওয়েই বলেন, অর্থনৈতিক ও লজিস্টিকসহ বিভিন্ন দিক চিন্তা করেই তারা মেক্সিকোতে তাদের কোম্পানি স্থাপন করেছেন। এখানে আমরা বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ, চারগুণ বেশি উৎপাদনের আশা করছি।

এদিকে চীনের একই কৌশল মেক্সিকান অর্থনীতিতেও দারুণ ভূমিকা রাখছে। গত বছরেই মেক্সিকোর মোট রপ্তানির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় পাঁচ দশমিক আট শতাংশ বেড়ে যায়। এছাড়া চলতি বছরের দুই মাসে মেক্সিকোতো যে পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে তা ২০২০ সালের ছয় মাসের বিনিয়োগের সমান।

মেক্সিকো জানিয়েছে, চীনের এই আগ্রহের কারণে তাদের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্লটের চাহিদা এখন আকাশচুম্বী। মেক্সিকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক অ্যাসোসিয়েশন (এএমপিআইপি) জানায়, ২০২৭ সাল পর্যন্ত নির্মাণাধীন সকল সাইট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।

তবে অনেকেই মেক্সিকোকে এক্ষেত্রে সাবধানে পা ফেলতে বলছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য সংঘাতের মাঝে পড়ে গেলে দেশটির অর্থনীতির বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটি অব মেক্সিকোর সেন্টার ফর চায়না-মেক্সিকো স্টাডিজের অধ্যাপক এনরিক দুসেল বলেন, নতুন ত্রিমাত্রিক এই সম্পর্কে বিপদে পড়ে যেতে পারে মেক্সিকো। কারণ এ বছরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেন, যিনিই হোয়াইট হাউসে আসুক না কেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্কে খুব একটা উন্নতি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে যে কোনো সময় মেক্সিকোর ওপরও বড় ধরনের চাপ আসতে পারে, তা বুঝার জন্য কারও ডক্টরেট করার দরকার নেই।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.