ভারত থেকে বের করে দেয়া হলো পাকিস্তানি ছাত্রদের

পাকিস্তান থেকে সংস্কৃতি বিনিময়ের বিশেষ কর্মসূচিতে ৪৪ জন পাকিস্তানি স্কুলছাত্রকে ভারতে নিয়ে এসেছিলো একটি সংগঠন। তাদের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের একজন শিক্ষকও। এক বছর ভারত থাকার কথা ছিলো তাদের। কিন্তু সম্প্রতি কাশ্মির নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনা চরমে পৌঁছার পর হঠাৎ করেই কর্মসূচিটি বাতিল করে ওই শিক্ষার্থীদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

দিন কয়েক আগে কাশ্মিরে ভারতের দুজন সেনার মাথাবিহীন মৃতদেহ পাওয়া যায়। ভারত এই ঘটনার জন্য কোনো তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে বসে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দেন এবং বলেন যে, তাদের সেনাবাহিনী নিশ্চয় সমুচিত জবাব দিবে।

এ দিকে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা বলে যে, তাদের সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদার। এ ধরনের কাজ তারা কখনোই করে না। তারপরও ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করে একের পর এক মন্তব্য আসতে থাকে। নিহত হওয়া দুই সেনার একজনের মেয়ে পাকিস্তানিদের ৫০টি মাথা দাবি করার মতো মন্তব্যও করেন।

এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরো জটিল হয়ে পড়ে। এ কারণেই মূলত পাকিস্তানি স্কুলছাত্রদের ভারতে রাখা নিরাপদ নয় বলে মনে করে তাদেরকে ভারতে নিয়ে আসা সংগঠনটি। পরে তারা তাদেরকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

যে সংগঠনটি সংস্কৃতি বিনিময়ের মতো কাজ করে, তাদের নাম রুটস টু রুটস। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান রাকেশ গুপ্ত জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানি স্কুলছাত্ররা ভারতে নিরাপদ নয় বলে সরকারই তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে। কাশ্মিরের ঘটনার পর ভারতজুড়ে পাকিস্তান বিদ্বেষ আরো বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ছোট ছোট বাচ্চারা কোথাও বেড়াতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হতে পারে। যা দুই দেশের জন্যই আরো বড় ঝামেলার সৃষ্টি করবে।

রাকেশ গুপ্ত জানান, সরকারের এমন পরামর্শের পরই তারা তাদের সিদ্ধান্ত নতুন করে বিশ্লেষণ করেন এবং স্কুলছাত্রদের তাদের দেশ পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেন। অর্থাৎ সংস্কৃতি বিনিময়ের পাঠ নিতে এসে রাজনৈতিক আচরণের শিকারই হন ওই শিক্ষার্থীরা।

ওই ছাত্ররা এক বছরের জন্য ভারতে এসেছিলেন এবং তাদের কর্মসূচি শেষ হয়ে যেতো আর মাত্র পাঁচদিনে। কিন্তু তার আগেই তাদের দেশে ফিরে যেতে হলো। এ ঘটনাও আসলে ভারত- পাকিস্তানের বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কের আরো একটা প্রমাণই বটে।