‘ভুল’ একাদশ নির্বাচনেই কি এভাবে হারল বাংলাদেশ?

ম্যাচ শেষে সঞ্চালক সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার, নাসের হুসেইন ও আতাহার আলী খানের বিশ্লেষণে বারবার উঠে আসছিল প্রসঙ্গটা, বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচন কি বেশিই রক্ষণাত্মক ছিল? ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে আট ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। স্পেশালিস্ট বোলার মাত্র তিনজন। ৩০৫ রান করেও এমন বড় হারের কারণ কি এটাই?

তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের ৭৯ রানে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু এতো বড় সংগ্রহ গড়েও ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপের তেমন পরীক্ষাই নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

জো রুটের অপরাজিত সেঞ্চুরি, অ্যালেক্স হেলসের সেঞ্চুরি প্রায় ইনিংস এবং অধিনায়ক ইয়ান মরগানের অপরাজিত ৭৫ রানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ বল হাতে রেখে আট উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। এতেই আলোচনা উঠছে বাংলদেশের একাদশ নির্বাচন ঠিক ছিল তো?

সাকিবকে বাদ দিলে স্পেশাল মাত্র তিনজন বোলার নিয়ে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও রুবেল হোসেন। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিং ধসের অভিজ্ঞতা নিয়েই হয়তো ব্যাটসম্যানে ভরে রাখা হয়েছিল একাদশ! তরুণ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের জায়গায় অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানো হয়েছে ইমরুল কায়েসকে।

ইমরুল ভালো করতে পারেননি। না পারাটা বড় আলোচনা নয়, বড় আলোচনা হলো বোলিংয়ের সময় মিরাজের মতো একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারের প্রয়োজনীয়তা বারবার চোখে পড়ল। পার্টটাইম বোলার মোসাদ্দেক হোসেন সৌকত ভালো বোলিং করেছেন। সে হিসেবে মিরাজেরও ভালো করার সুযোগ ছিল।

সুযোগ যে ছিল মঈন আলীও বুঝিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। তামিম ইকবালের অনেকবার পরীক্ষা নিয়ে আট ওভার বোলিং করে মাত্র ৪০ রান দিয়েছেন ইংলিশ স্পিনার। বিশেষজ্ঞ বোলার না থাকায় পার্টটাইম বোলারদের দিয়ে বোলিং করাতে হয়েছে বেশি মাশরাফিকে।

মূলত ব্যাটিং লাইনআপের শক্তি বাড়াতেই স্পেশালিস্ট বোলার বাদ দিয়ে ইমরুলকে একাদশে নেওয়া। কিন্তু এই চিন্তা কোন কাজেই আসেনি প্রথম ম্যাচে। মোসাদ্দেক হোসেনকে ব্যাট করতে নামতে হয়েছে আট নম্বরে। শেষ দিকে ঠিক ভাবে খেলতেও পারেননি মোসাদ্দেক-মাহমুদউল্লাহরা।

ব্যাটসম্যানে ঠাসা একাদশ হয়েও শেষ পাঁচ ওভারে ৪৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। অর্থাৎ একজন ব্যাটসম্যান বেশি নিয়ে ব্যাটিং লাইনআপের কোন উন্নতিই হয়নি, উল্টো একজন বিশেষজ্ঞ বোলার কম খেলাতে বোলিং লাইনআপ দুর্বল হয়েছে। এই কারণটাই প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বড় পরাজয়ের কারণ কিনা কে জানে!

ইমরুলের জায়গায় মিরাজকে খেলালে জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যেতো বাংলাদেশের তেমনটা বলার অবস্থা অবশ্য তৈরি হয়নি। তবে তিনশ পেরিয়েও যে আট উইকেটের বড় ব্যবধানে হারতে হলো, এই ব্যবধানটা হয়তো কমানো যেতো!