ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের পুঁজি ১৮২

ছন্নছাড়া ব্যাটিং মনে হয় একেই বলে! কিংবা পরিকল্পনাহীনও বলা যায়। এই ছন্নছাড়া বা পরিকল্পনাহীন ব্যাটিংয়ের দৃষ্টিকটু প্রদর্শনীই আজ সাজিয়ে বসেছিলেন মুশফিক- সাব্বিররা। তামিম ইকবালের অনবদ্য ৯৫ রানের পরও ছয় বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমে বাংলাদেশ করতে পারলো মোটে ১৮২ রান।

তামিম, সাকিব ও মিরাজ ছাড়া দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি কেউই। তামিমের সামনে সুযোগ ছিলো টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার। কিন্তু পারেননি তিনি। পাঁচ রান বাকি থাকতেই উইকেট খুইয়ে ফেরেন তিনি। এই ইনিংসের মাধ্যমে সর্বশেষ ছয় ইনিংসের চারটিতেই ৫০ বা এর চেয়ে বেশি রান করার কৃতিত্ব দেখালেন তামিম।

এই অস্ট্রেলিয়া দুর্দান্ত, কোনো সন্দেহ নেই। এই বাংলাদেশও তো কম দুর্দান্ত নয়! কিন্তু মাঠের খেলায় আজ তার প্রভাবের ছিটেফোটাও দেখঅ গেলো না। এক তামিম ইকবাল ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে কিছুই করতে পারেননি কেউ।

অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণের মুখে ৫৩ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে অবশ্য প্রতিরোধ করে তুলেন তামিম- সাকিব। তাদের জুটিতে আসে ৬৯ রান।

এর আগে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তামিম ইকবাল। তার সেঞ্চুরির সুবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো তিনশর বেশি রান করে বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত হেরে যেতে হয়।

আজ বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় সৌম্যের আউটের মাধ্যমে। দলীয় ২২ রানে জস হ্যাজলউডের বলে উইকেটকিপারের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ১১ বলে মাত্র তিন রান করেছিলেন তিনি। সুবিধা করতে পারেননি ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিমও।

দলীয় ৩৭ রানে ইমরুল আউট হন প্যাট কামিন্সের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। তিনি করেছিলেন ছয় রান। আর মুশফিক মইসেস হেনরিকের বলে এলডব্লিউ হয়ে ফেরেন মাত্র নয় রান করে। ৫৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ঘোর বিপদের মুখে, তখন চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন তামিম- সাকিব। ৬৯ রানের জুটিতে বাংলাদেশ মোটামুটি লড়াইয়ের একটা পুঁজির কথা ভাবছিলো।

কিন্তু ব্যক্তিগত ২৯ রানে সাকিব আউট হওয়ার পর নামা সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহর মিলিত অবদান মাত্র ১৬ রান। ১২ রানের ব্যবধানে এ দুজনের আউটের পর বাংলাদেশের লড়াইয়ের পুঁজির স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।

এ দিকে ৪৩তম ওভারে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন মিচেল স্টার্ক। ওই ওভারের প্রথম বলে তামিমকে বিদায় করেন তিনি। পরের বলটা কোনো রকমে সামলান মাশরাফি। কিন্তু তিন নম্বর বলটাতে আর পারেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক। গেছেন আট হয়ে। চার নম্বর বলে স্টার্ক তুলে নেন রুবেলের উইকেট। পঞ্চম বলটা ছিলো স্টার্কের হ্যাটট্রিক বল। স্ট্রাইক ছিলেন মোস্তাফিজ। স্টার্ক অসাধারণ এক ইয়র্কার মেরে মোস্তাফিজের উইকেট উপড়েই ফেলেছিলেন প্রায়। কিন্তু মোস্তাফিজ কীভাবে যেনো বলটা ঠেকিয়ে ফেলেন! হ্যাটট্রিকবঞ্চিত হন স্টার্ক।

বাংলাদেশ অবশ্য ততক্ষণে মোটামুটি লড়াইয়ের পুঁজি জমা করা থেকেও অনেক দূরে। বাকি থাকা মিরাজের উইকেটটা স্টার্কই তুলে নেন নিজের পরের ওভারে। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৮২ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৯ রান দিয়ে চার উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক।