‘গলায় ছুরি ধরলেও বন্দেমাতরম গাইবো না’

ভারতের বিজেপি এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংস্থা শিবসেনা শাসিত মহারাষ্ট্র প্রদেশে বিতর্কিত সঙ্গীত ‘বন্দেমাতরম’ গাওয়া বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতবর্ষের মুসলমানরা বহু আগে থেকেই এই সঙ্গীত গাইতে অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রে মুসলমানদেরও এই গান গাইতে বাধ্য করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যেই ‘অল ইন্ডিয়া মজলিশ ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন'-এর বিধায়ক ওয়ারিস পাঠান ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমার ঘাড়ে যদি বন্দুক এবং গলায় ছুরি রাখা হয়, তারপরও আমি এই গান গাইবো না।’

বন্দমাতরম— গানটির রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। হিন্দু ধর্মের দেবি দুর্গার অর্চনার জন্য এই সঙ্গীত রচনা করেছিলেন তিনি। মুসলমানদের এই গান গাওয়া মানে ইসলামি বিধান অনুসারে শিরকের মতো পাপ করা। এ কারণেই মূলত ভারতবর্ষের মুসলমানরা সব সময় এই গান গাইতে অস্বীকার করে আসছে।

দুর্গার অর্চনার জন্য রচনা করা সঙ্গীতে ভারত সরকার পরবর্তীতে ‘দেশীয় সঙ্গীত’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকেই ভারতের সব নাগরিককে এই গান গাওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়।

মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক রাজ পুরোহিত এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি রাজ্য সরকারকে বলে বন্দেমাতরম গাওয়ার জন্য বিধান তৈরি করবেন। তার এই ঘোষণার পর সমাজবাদী পার্টির মুসলিম নেতা আবু আজমি বলেন, ‘দেশ বিভাগের সময় কিন্তু এ কথা বলা হয়নি যে, হিন্দুদের গানও মুসলমানদের গাইতে বাধ্য করা হবে। সরকার যদি আমাকে গুলি করে অথবা দেশ থেকে ছুঁড়ে ফেলে, তারপরও আমি বন্দেমাতরম গাইবো না।’

বন্দেমাতরম গাইতে অস্বীকার করায় মহারাষ্ট্রের পরিবহমন্ত্রী ও উগ্র হিন্দু মৌলবাদি সংস্থা শিবসেনার নেতা দিবাকর রাউত। তিনি বলেন, ‘ওরা যদি বন্দেমাতরম গাইতে এতোই ঘৃণা করে, তবে পাকিস্তান চলে যাক। এ গানের মাধ্যমে কেবল দেশপ্রেমই প্রতিফলিত হয়।’