পরপর দুই টেস্টে টস জিতে বোলিং নেয়া এবং প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের রানের নিচে চাপা পড়া; দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এগিয়ে এই হলো দেশের প্রতি মুশফিকুর রহিমের উপহার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তার সীমানায় দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করা এবং এ সংক্রান্ত আলোচনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করে দেয়া। ব্যস, শুরু হয়ে গেছে মাতম— হটাও মুশফিক, বাঁচাও ক্রিকেট। কিন্তু মুশফিকের এমন বেহাল হওয়ার নেপথ্যে যিনি আছেন, চান্দিকা হাথুরুসিংহে, ব্যর্থতার নিচে চাপা পড়া যদি মুশফিকের অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে এই ব্যর্থতার খাদ তৈরি করে দেয়ায় চান্দিকার কোনো দায় থাকবে না?

mushfiq might lose his captaincy after south africa sereis

অধিনায়ক হিসেবে মুশফিক সাধারণ— অর্ডিনারি। কিন্তু সাধারণ মুশফিকের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টেস্ট জিতেছে। ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বিপক্ষে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। সে কথা আপাতত বাদ। এটা তো জানা কথাই যে, জিতলে কৃতিত্বের দাবিদার অনেক। কিন্তু হারলে অধিনায়ক হয়ে যান অনাথ; যেনো দুনিয়ায় তার কেউ নেই।

লম্বা সময় ধরে এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটাঙ্গনে স্পষ্ট সত্য হিসেবে দাঁড়িয়েছে যে, উইকেটের পিছনে মুশফিককে চান না প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে। এ জন্য নানাভাবে মুশফিককে চাপ প্রয়োগ করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতি বোর্ডের যেখানে উচিত মুশফিকের পাশে দাঁড়ানো, সেখানে তা না করে বোর্ড অবারিত স্বাধীনতা দিয়েছে চান্দিকাকে। ফলাফল— মাঠে মুশফিক কোথায় ফিল্ডিং সেট করবেন, ড্রেসিংরুমে বসে কফি খেতে সেই সিদ্ধান্তও দিয়ে যাচ্ছেন কোচ!

প্রশ্ন হলো, অধিনায়ক হয়েও মুশফিক কেনো এ সবের বিরোধিতা করেননি? কেনো তিনি বলেননি যে, মাঠের খেলায় তিনি যা বলবেন, তার উপর কোনো কথা নেই। মুশফিক তা করেননি। আসলে করতে পারেননি। কারণ বোর্ডও তার পক্ষে ছিলো না।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে মুশফিক যখন বললেন যে, তিনি শ্রীলঙ্কায় কিপিং করেননি, এটা তার ইচ্ছেতে হয়নি। মানে মুশফিককে প্রথমবার উইকেটকিপিং থেকে সরিয়ে দেয়াটা ছিলো জোর করে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটসম্যান এবং অধিনায়ক মুশফিকের মনোসংযোগে চিড় ধরেছে। একজন অধিনায়ক, ফিল্ডিংয়ের সময় মাঠে যিনি উইকেটরক্ষক এবং দলের সেরা ব্যাটসম্যান; তিনি যখন নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না কোথায় ফিল্ডিং করবেন, এ রকম পরিস্থিতির দায় কার? এই অগোছালো পরিস্থিতির দায় কি কোচের উপর বর্তায় না?

পরিস্থিতি যে এ দিকে যাবে, তার একটা আন্দাজ তো করা যাচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের সময়ই। অধিনায়ক হিসেবে অনেক সিদ্ধান্ত মুশফিক নিতে পারছেন না, এটা যখন তিনি সংবাদ মাধ্যমে আকারে-ইঙ্গিতে প্রকাশ করলেন, তখন বোর্ড প্রধান বলে বসলেন যে, ‘মাশরাফিও তো অধিনায়কত্ব করে, তার তো এমন সমস্যা হয় না।’ বোর্ড প্রধানের এই কথা কি মুশফিককে আরো কোণঠাসা করে দেয়নি? মানে বোর্ডই চরম বিপদের সময় তাদের নিয়োগ করা অধিনায়কের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ।

মাঠে দলকে অনুপ্রাণিত রাখা, জরুরি মুহূর্তে ক্রিকেটীয় দারুণ সব সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়া যদি অধিনায়কের কাজ হয়, তাহলে কোচের কাজ নিশ্চয় এই দলটাকে একটা সূতোয় বেধে রাখা। অভিভাবক হয়ে দলের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধান করা। চান্দিকা এই কাজ কতোটা করছেন আর দলের মধ্যে বিভক্তি কতোটা ছড়াচ্ছেন?

চান্দিকার কোচিংয়ে বাংলাদেশ দল অবিস্মরণীয় সব কীর্তি গড়েছে। সন্দেহ নেই। কিন্তু চান্দিকার অধীনেই যে বাংলাদেশ দল এখন একটা পাড়ার দলের মতো দ্বিধা-বিভক্তিতে ভরা, এটাও সত্য, যদিও তিক্ত খুব। অধিনায়ক হিসেবে মুশফিক তার ব্যক্তিত্বের সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাতে ব্যর্থ, কোচেরও ব্যর্থতা কম নয়। বরং মুশফিকের তুলনায় চান্দিকার ব্যর্থতাই বড়; কারণ তিনি অধিনায়কের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। দিনে দিনে মুশফিককে করে তুলেছেন ‘ব্যক্তিত্বহীন’ সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা এক অধিনায়ক।

মুশফিককে যদি তার ভুলের মাশুল দিতে হয় অধিনায়কত্ব ছেড়ে, তবে চান্দিকাকেও ব্যর্থতার দায় নিতে হবে। বাকি কাজ বোর্ডের। বোর্ড কী করে, সেখানেই আপাতত চোখ ক্রিকেট সমর্থক ও বিশ্লেষকদের।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.