রংপুরের লজ্জা এখন চিটাগংয়ের, সিলেটের বিশাল জয়

এমনিতেই ম্যাচটি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তেমন উত্তেজনা নেই। কারণ সিলেট সিক্সার্স এবং চিটাগং ভাইকিংস পড়ে আছে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকে। এদের মধ্যে চিটাগং শেষ চারের লড়াই থেকে আগেই ছিটকে গেছে। সিলেটের অবস্থাও খুব নাজুক। এমন ম্যাচে আবার সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ড গড়লো চিটাগং। যা টপকে যেতে কোনোই বেগ পেতে হয়নি সিলেটকে। তারা জিতে গেছে ১০ উইকেটে। 

এমনিতে নিরুত্তাপ ম্যাচটিকে আরো বেশি রসহীন করে দেয় চিটাগং ভাইকিংস, মাত্র ৬৭ রানে অলআউট হয়ে। একদিন আগে ৯৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো রংপুর রাইডার্স। যা ছিলো চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জা। কিন্তু লজ্জা বেশি দিন পেতে হলো না তাদের। কারণ তাদের লজ্জা যে এখন চিটাগংয়ের!

চিটাগংয়ের এই দুরাবস্থার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন সিলেটের অধিনায়ক নাসির হোসেন। চার ওভারে ৩১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন তিনি। যা আসরের চতুর্থ সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। নাসিরের আগে এই বিপিএলে মাত্র তিনজন বোলার ইনিংসে পাঁচটি করে উইকেট নিতে পেরেছে। তাদের মধ্যে পেসার দুজন এবং একজন স্পিনার।

ম্যাচটিতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে চিটাগং। নাসির হোসেনের প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারায় তারা। মিরপুরের উইকেট যে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বিমাতাসূলভ আচরণ করছে, চিটাগংয়ের ইনিংসের শুরুটা যেনো তার নতুন প্রমাণ নিয়েই এলো।

প্রথম ওভারে দুই উইকেট হারানো চিটাগং একদমই স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। টানা চার ওভার করে ৩১ রান দিয়ে তাদের অর্ধেক ব্যাটসম্যানকে ড্রেসিংরুমে ফেরান নাসির। তার ফাঁকে ফাঁকে এসে তিন উইকেট নেন নাবিল সামাদ। দুই উইকেট নেন শরিফুল্লাহ।

মানে চিটাগংয়ের পড়ে যাওয়া ১০ উইকেটের সবগুলোই শিকার করেন স্পিনাররা। স্পিনারদের এমন দাপট বিপিএলে আগে দেখা যায়নি। স্পিনারদের এমন দাপটের পর ৬৮ রানের লক্ষ্য পূরণ করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই যেতে যায় সিলেট। 

আগের দিন রংপুর রাইডার্স ৯৭ রানে গুটিয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে শেষ ওভারে গিয়ে জয় পায় কুমিল্লা। ম্যাচ শেষে তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মর্তুজা, দুজনই মিরপুরের উইকেট নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। মাশরাফি বলেন যে, এ ধরনের উইকেটে টি-টোয়েন্টি খেলা কঠিন। আর তামিম তার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে বলেন, মিরপুরের এই উইকেট জঘন্য।

রংপুর-কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা উইকেটে সুবিধা করতে না পারলেও ঢাকা ২০০-এর উপরে করে ফেলে পরের ম্যাচে। তবে যতোটা না তাদের ব্যাটসম্যানদের অবদান, তার চেয়ে ঢের বেশি ‘অবদান’ ছিলো রাজশাহীর ফিল্ডারদের। ঢাকার ইনিংসের কারণেই উইকেটকে স্পোর্টিং বোলার কোনো সুযোগ নেই, কারণ তাদের জবাব দিতে নেমে রাজশাহী গুটিয়ে যায় ৯৯ রান পিছনে থাকতে!

মিরপুরের উইকেট যে ব্যাটিং-বান্ধব নয়, টানা তৃতীয় ম্যাচে এসে তা প্রমাণ হলো। সামনে বিপিএলের গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচ। মিরপুরের এমন উইকেট সেই ম্যাচগুলোতে কেমন করবে, তার কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে এখনই।