সাকিব না থাকাতেই এমন হতাশার হার?

শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ৪২ তম ওভারের দ্বিতীয় বল। ৩০ রান নিয়ে স্ট্রাইকে দিনেশ চান্দিমাল। ননস্ট্রাইকে দুই রান নিয়ে আসেলা গুনারত্নে। বোলিংয়ে মোস্তাফিজুর রহমান। বলটা হলো, চান্দিমাল তা ঠেলে দিলেন লং অফের দিকে। শর্ট কাভারে ডাইভ দিয়ে ফিল্ডিং করতে গিয়ে বলটা মিস করে পড়ে রইলেন সাকিব।

আপাত নিরীহ এই দৃশ্যটাই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের জন্য হয়ে রইলো অনন্ত আক্ষেপের। সাকিব মাঠে পড়ে উপুর হয়ে পড়ে ছিলেন তার বাঁ হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে মারাত্মক চোট পেয়ে। সঙ্গে সঙ্গে ফিজিও এসে সাদা তোয়ালেতে সাকিবের হাত জড়িয়ে তাকে নিয়ে যান মাঠের বাইরে। ম্যাচে আর ফেরা হয়নি সাকিবের। বাংলাদেশও পেরুতে পারেনি ২২২ রানের লক্ষ্য।

সাকিবের ওই দুর্ভাগ্যের ইনজুরিতে কি আরো একটা ফাইনালে হতাশ করলো বাংলাদেশ? ম্যাচ শেষে এমন একটা প্রশ্ন অবধারিতভাবেই গেলো অধিনায়ক মাশরাফির কাছে। উত্তরে অধিনায়ক সরাসরি এটা স্বীকার করেননি যে, সাকিবের ওই বিদায়ই আসলে ভেঙে দেয় তাদের মনোবলের ভিত। কিন্তু যা বলেছেন, তাতে আসলে ঘুরেফিরে স্বীকারোক্তি বেরিয়েই গেছে।

‘স্বাভাবিকভাবেই দলের সেরা খেলোয়াড় নেই…। তারপরও আমার মনে হয় না (ওর ইনজুরিই মনোবল ভেঙে দিয়েছে)। সাকিব যখন পড়ে যায়, তখন তার হাত দেখেই আমরা বুঝেছিলাম যে, ওকে ব্যাটিংয়ে পাচ্ছি না। আমরা ড্রেসিংরুমে সেটা নিয়ে কথা বলেছি। সাকিব যে নেই সেটা মাথায়ও আনতে চাইনি আমরা। আসলে অজুহাত দেখানো ঠিক হবে না। আমাদের ২২১ রান তাড়া করার ব্যাটসম্যান ছিলো।’

অধিনায়ক ভুল বলেননি— আসলেই তার দলে ২২১ রান তাড়া করার মতো ব্যাটসম্যান আছে। কিন্তু তারা সবাই ধসে গেলেন ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে। সবাই বলা আসলে ঠিক হলো না। শেরে বাংলার নিঃসঙ্গ শের হয়ে লড়লেন কেবল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু অন্যেরা কি ফাইনালের চাপেও ওইভাবে গুঁড়িয়ে গেলেন?

মাশরাফি এ প্রশ্নে একমত হননি। তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু সংঘবদ্ধই ছিলাম। বিশেষ করে আমাদের বোলিংটা ভালো হয়েছে, কারণ আমরা ওদের ২২১ রানের মধ্যে আটকাতে পেরেছি। ব্যাটসম্যানরা আরো একটু সময় উইকেটে থাকলে হয়তো অন্য রকম হতো।’

এই কথাটা বলতে বলতে মাশরাফির কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলো এই কথাও, ‘জানি না সাকিব না থাকাটা কারো মনে কোনো প্রভাব ফেলেছে কিনা।’ মাশরাফি যেনো স্বীকারই করে নিলেন যে, সত্যিই সাকিবের না থাকাটা বাংলাদেশকে এই ফাইনালে মানসিকভাবে পিছিয়ে দিয়েছিলো অনেকটা।