অ্যামাজনে বিক্রি হচ্ছে চা বিক্রেতার উপন্যাস!

একজন চা বিক্রেতার লিখা বই বিক্রি হচ্ছে অ্যামাজনের মত বিশাল অনলাইন মার্কেটে। শুনে নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন! অবশ্য অবাক হওয়ার মতই খবর এটি। লক্ষ্মণ রাও নামের এই ব্যক্তি পেশায় একজন চা বিক্রেতা হলেও অন্য আর দশজন চা বিক্রেতার মত নয়। নিজ দেশে লেখক হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও আমাজনের মাধ্যমে বিশ্বব্যপী তৈরি করে নিয়েছেন আলাদা একটা পরিচয়। দিল্লি শহরের খোলা আকাশের নিচে চা বিক্রি করলেও এ পর্যন্ত ২৪টি উপন্যাস লিখেছেন লক্ষ্মণ রাও। আপাতত তার চায়ের দোকানেই বিক্রি হচ্ছে তার রচিত বই। পাশাপাশি বিশ্বের শীর্ষ অনলাইন বাজার অ্যামাজনেও বিক্রি হচ্ছে তার লিখিত উপন্যাসগুলো। লক্ষ্মণ রাওয়ের ছেলে হিতেশ জানিয়েছে,বাবার লেখা উপন্যাসগুলো অ্যামাজনে বিক্রিও হচ্ছে বেশ।

পশ্চিম ভারতে জন্ম গ্রহণ করেন লক্ষ্মণ রাও। লেখক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলে আসেন দিল্লিতে। তারপর শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে দিল্লি শহরে প্রথমে কাজ শুরু করেন। এরপর রেস্টুরেন্টের রান্নাঘরেও কাজ করেন তিনি। এভাবে ছোট ছোট কাজ করে অর্থ জমিয়ে প্রথমে দেন পান-বিড়ির দোকান এবং পরে সেটি চায়ের দোকানে রুপান্তরিত করেন।

শিক্ষার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই লক্ষণ রাও। হিন্দি ভাষার উপর নিয়েছেন স্নাতক ডিগ্রি। দূরশিক্ষণের মাধ্যমে মাস্টার্স ডিগ্রিও শেষের পথে। কিন্তু তাতে কি? বই ছাপাতে গিয়ে ঠিকই মুখাপেক্ষী হয়েছেন নানা জটিলতার। প্রকাশকরা নাক উচু করে বারবার ফিরিয়ে দিয়েছেন তাকে। কোন রকমের পাত্তাই দেয়নি প্রকাশকরা।

তাই বাধ্য হয়ে নিজেই টাকা জমিয়ে প্রকাশ করেন নিজের প্রথম লিখা উপন্যাস ‘রামদাস’। এটি প্রকাশের পর বিক্রিও হয় বেশ। প্রথম সংস্করনের পর দ্বিতীয় সংস্করণও বের করা হয়। বর্তমানে রামদাসের তৃতীয় সংষ্করণ চলছে। এ যাবত বিক্রি হয়েছে মোট ৪০০০ কপিরও বেশি। অ্যামাজনে তার বইয়ের মধ্যে রামদাসই বেস্ট সেলারের তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছে তার ছেলে।

লক্ষ্মণ রাও সম্পর্কে কোন এক সূত্র থেকে খবর পাওয়ার পর ১৯৮৪ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করার ডাক পড়ে তাঁর। তারপর ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এই সংগ্রামী লেখক। কিন্তু ভারতের সাহিত্য জগতে এখনো স্বীকৃতি মিলে নি তার। আজ পর্যন্ত ডাকও পড়ে নি ভারতের কোন সাহিত্য উৎসবে।

আপনি আরো পড়তে পারেন 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লেন

আইনস্টাইন-হকিংকে ছাড়িয়ে গেলো যে কিশোরী

গ্রাম পাহারায় মানুষের শুটকি!