হঠাৎ করেই বিদায় বলে দিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স

হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরম্যাট থেকে বিদায় বলে দিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ক্রিকেট সুপার স্টার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) চলতি আসরে নিজের শেষ সাত ইনিংসের পাঁচটিতেই করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। অথচ বিদায়ের ঘোষণা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তার মধ্যে নাকি আর ক্রিকেট বাকি নেই!

ডি ভিলিয়ার্সের বিদায়ের ঘোষণা বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে দারুণ এক ‘শক’ হয়ে এসেছে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে তো নয়ই, গত কয়েক বছরেও তাকে ক্লান্ত বা ফর্মহীন মনে হয়নি। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্স বলছেন, ‘এটাই বিদায় নেয়ার সেরা সময়’।

ভিলিয়ার্স বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং এখন থেকেই। ১১৪টি টেস্ট, ২২৮টি ওয়ানডে এবং ৭৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার পর মনে হচ্ছে এখন অন্যদের দায়িত্ব নেয়ার সময়। আমার যতো দূর খেলার কথা ছিলো, খেলে ফেলেছি। সত্য কথা বলতে, আমি এখন ক্লান্ত।’

কিছুদিন আগেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২০ হাজার রান পূরণ করেছেন সমকালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই ব্যাটসম্যান। টেস্ট এবং ওয়ানডে, দুই ফরম্যাটেই ৫০-এর উপর গড়ে রান করা এই ব্যাটসম্যান দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। টেস্ট না হোক, অন্তত সীমিত ওভারের ফরম্যাটে তার চেয়ে সেরা ব্যাটসম্যান বর্তমানে কমই আছে। ধারণা করা হচ্ছিলো, ১৪ বছরের ক্যারিয়ারটা অন্তত আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত দীর্ঘ করবেন তিনি।

অবসরের সিদ্ধান্ত বিষয়ে ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন ছিলো। কিন্তু আমি অনেক চিন্তা করেছি, অনেক ভেবেছি। শেষ পর্যন্ত মনে হয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ দুটি সিরিজ জয়ের পর এখনই অবসরের সের সময়।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রোটিয়াদের হয়ে নির্দিষ্ট কোনো ফরম্যাট খেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আমি নেইনি। আমার মনে হয়েছে সবুজ ও সোনালী রঙের জার্সি গায়ে খেললে সব খেলবো, অথবা কোনোটা খেলবো না। আমি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের কোচ, সাপোর্ট স্টাফসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে আমার ক্যারিয়ারজুড়ে যারা সতীর্থ ছিলেন, তাদেরকে ধন্যবাদ। তারা না থাকলে, আমি যা হয়েছি, তার অর্ধেকও হতে পারতাম না।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দিলে অন্য স্বীকৃত ক্রিকেট খেলবেন বলে মন্তব্য করেছেন ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। ১৯৮৪ সালে প্রেটোরিয়াতে জন্মগ্রহণ করা ডি ভিলিয়ার্স ২০০৪ সালে টেস্ট অভিষেক দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ২০০৫ সালে ওয়ানডে এবং ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টিও খেলতে শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ২২টি টেস্ট সেঞ্চুরি ও ২৫টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম আকর্ষণীয় এই ব্যাটসম্যান। তার অবসর ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকদিন যন্ত্রণা দিবে, নিঃসন্দেহে।