প্রথম বিশ্বকাপেরই অংশ হতে পারতো সুইজারল্যান্ড। কিন্তু অনেকটা বাধ্য হয়ে ইউরোপীয় মহাদেশের বিদ্রোহের সঙ্গে যোগ দিতে হয়েছে তাদের। সুইসরা স্বপ্নের বিশ্বকাপ খেলেছে চার বছর পরই, ১৯৩৮ সালে। প্রথম আসরেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল সুইজারল্যান্ড। সাফল্যের ধারা পরের বছরও অব্যাহত রেখেছিল তারা।

switzerland football team 2018

তবে পরবর্তী বিশ্বকাপে অর্থাৎ ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো গ্রুপপর্বে বাদ পড়ার অভিজ্ঞতা হয় সুইসদের। টানা তিনটি বিশ্বকাপ খেলার পর ১৯৫৪ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো বিশ্বমঞ্চ নিজেদের উঠোনে সাজায় সুইজারল্যান্ড। ঘরের মাঠে ওই টুর্নামেন্টে আবারো শেষ আটে উঠে যায় তারা। এরপর থেকেই টালমাটাল হয়ে পড়ে দেশটির ফুটবল।

পরপর তিনটি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার দুঃস্মৃতির অভিজ্ঞতা হয় তাদের। এরপরের ইতিহাস আরো করুণ। টানা ছয়টি বিশ্বকাপের আসরে সুইসরা ছিল দর্শক সারিতে। মাঝে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ফিরে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেও শনির দশা লাগে পরের দুই বিশ্বকাপে। বাছাইপর্বের বাধা পাড়ি দিতে পারেনি সুইজারল্যান্ড।

অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে ধীরে ধীরে কক্ষপথে ফিরতে শুরু করেছে দেশটির ফুটবল দল। ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে ফেরার পর থেকে বিশ্বমঞ্চের নিয়মিত দল হয়ে উঠেছে তারা। কিন্তু চতুর্থবার কোয়ার্টার ফাইনালে আর ওঠার সৌভাগ্য হয়নি সুইজারল্যান্ডের। ২০০৬ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে সুইসরা। মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ে তারা।

বিশ্বকাপের মঞ্চে অভিজ্ঞতার কোনো কমতি নেই সুইজারল্যান্ডের। দশটি আসর খেলেছে তারা। তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দূরে থাক, সেমিফাইনালেই উঠতে পারেনি সুইসরা। এবার সেই আক্ষেপটা দূর করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সুইজার নাতিরা।

সুইজারল্যান্ডের মানুষকে এবার আশা দেখাচ্ছে সাম্প্রতিককালের পারফরম্যান্স ও ফিফা র‌্যাঙ্কিং। যারা আপাতত র‌্যাঙ্কিং তালিকার ছয় নাম্বারে আছে। জাতীয় দলের এতো উন্নতির কারণ কয়েকজন অভিজ্ঞ ফুটবলার। এই বিশ্বকাপেও তাদের ভরসা এসব তারকা ফুটবলার। দলের স্বপ্নযাত্রার প্রধান সারথি জেদ্রান শাকিরি। আক্রমণভাগের নেতৃত্বটা থাকবে তার ওপর।

মধ্যমাঠে সুইজারল্যান্ডের প্রাণ আর্সেনাল তারকা গ্রানিথ জাকা। গোল পোস্টের নিচে তাদের ভরসা বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষক রোমান বুর্কি। তবে পুরো আসরে তাদের নেতৃত্ব দেবেনে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৮টি ম্যাচ খেলা স্টিভেন লিচস্টাইনার। এসব অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের সঙ্গে কিছু প্রতিভাবান ফুটবলারের সমণ্বয় ঘটিয়েছেন প্রধান কোচ ভ্লাদিমির পেটকোভিচ।

দ্বিতীয় বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সুইজারল্যান্ড ১৯৬০ সালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়শিপের প্রথম আসরেই অংশ নিতে পারতো। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ওই আসরে আমন্ত্রণ পেয়েও খেলতে পারেনি তারা। এর পরিণাম- প্রথম ইউরো বিশ্বকাপ খেলার জন্য তাদের অপক্ষো করতে হয়েছে ৩৬ বছর পর্যন্ত! ইউরোতে এ পর্যন্ত চারটি আসর খেলে তাদের সর্বোচ্চ অর্জন গত আসরে দ্বিতীয় রাউন্ড খেলতে পারাটা।

অবশ্য জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্যর্থতার সাগরে হাবুডুবু খেলেও সুইজারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দল বেশ সফল। ২০০৯ সালে দেশটির ফুটবল সবচেয়ে বড় সাফল্য পেয়েছিল। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সুইস যুবারা। ১৬ বছর আগে ইউরো বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতেছিল সুইজারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক এই দলটি। এ ছাড়া ১৯২৪ প্যারিস অলিম্পিকে রুপা জিতেছিল সুইসরা।

এবার ছোটদের দেখানো পথেই হাঁটার স্বপ্ন দেখছে সুইজারল্যান্ডের বড় (জাতীয়) দল। সে লক্ষ্যে আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বেই কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে তাদের। ‘ই’ গ্রুপে তাদের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল, সার্বিয়া ও কোস্টারিকা। সুইসদের জন্য সবচেয়ে অস্বস্তির খবরটা হচ্ছে ১৭ জুন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই তাদের প্রতিপক্ষ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রজিল!

বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফার দাপ্তরিক অফিস সুইজারল্যান্ডের বুকে। অথচ ফুটবল কখনোই ওই দেশের জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে পারেনি। এখনো সুইসদের প্রধান, জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী খেলা হচ্ছে আইস স্কেটিং। এই খেলার কারণে বিখ্যাত হয়ে আছে সারা বছর বরফের চাদরে ঢাকা থাকা দেশটি।

সুইজারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের ছদ্ম নাম সুইজার নাতি। নাতি শব্দটা মূলত জার্মান ভাষার। বিশ্বের যে ক’টি দেশে নিজেদের ভাষা প্রতিষ্ঠিত নেই তার মধ্যে একটি হলো সুইজারল্যান্ড। দেশটির মানুষ বিদেশি তিনটি ভাষায় কথা বলে। অধিকাংশ মানুষ কথা বলে জার্মান ও ফ্রেঞ্চ ভাষায়। এর বাইরে কিছু লোক ইতালিয়ান ভাষার ওপর নির্ভরশীল। তবে একধারে তিনটি ভাষারই প্রচলন আছে দেশটির সর্বত্র।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.