দু-এক আসর ঘুরে ফিরেই ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকায় বসতো বিশ্বকাপের আসর। কিন্তু ১৯৭৮ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ল্যাটিনদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল দেড় দশকেরও বেশি সময়। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ ঘুরে অবশেষে ফুটবল মহাযজ্ঞ ফেরে ল্যাটিন আমেরিকায়; একাদশ বিশ্বকাপের স্বাগতিক হয় আর্জেন্টিনা। ওই আসরেই প্রথমবারের মতো স্বপ্ন পূরণ করে আর্জেন্টাইনরা; জয় করে বিশ্ব ও সোনালি ট্রফি।

argentina celebrate their first world cup trophy

অবশ্য এই বিশ্বকাপের আয়োজন থেকে শুরু থেকে শেষ অবধি ছিল বিতর্কে ঠাসা। দল হিসেবে মাঠের পারফরম্যান্সে সফল হলেও আয়োজক হিসেবে তুমুলভাবে সমালোচিত হয় আর্জেন্টিনা। কারণ তখন ল্যাটিন দেশটিতে চলছিল সামরিক শাসন। আর্জেন্টাইনদের হাতে আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে বেশ বিতর্কে পড়েছিল ফুটবলের সর্বোচ্চ ফিফা-ও।

১৯৭৮ বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তা বর্জন করেছিল অনেক দেশ। এমনকি আগের আসরের রানার্সআপ নেদারল্যান্ডসও হুমকি দিয়ে বসেছিল বিশ্বকাপ বয়কটের। যদিও বহু নাটকের পর বাছাইপর্ব খেলতে নামে ডাচ শিবির। তবে মূলপর্বের টিকিটের জন্য বেগ পেতে হয়নি তাদের। কিন্তু অঘটনের শিকার হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছিল চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লাভিয়া, ইংল্যান্ড, উরুগুয়ের মতো জায়ান্ট দলগুলো। বাছাইপর্বের গণ্ডি পার হতে পারেনি এ চারটি দল।

বড় দলগুলোর হোঁচটের বাছাই রাউন্ডে চমক দেখিয়েছিল ইরান ও তিউনিশিয়া। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যায় এশিয়ান ও আফ্রিকান দল দুটো। শেষ পর্যন্ত ১১তম বিশ্বকাপে যেসব দল অংশ নিয়েছে তা হলো- আর্জেন্টিনা (স্বাগতিক), পশ্চিম জার্মানি (চ্যাম্পিয়ন), সুইডেন, স্পেন, ইতালি, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, স্পেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, পেরু, ইরান ও তিউনিশিয়া। এসব দল নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার একই ফরমেটে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ড রবিন লিগ রাউন্ড পদ্ধতিতে সাজানো হয়।

কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে বড় ধরণের একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়। ডাচ কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফের স্ত্রীকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। পরে অবশ্য বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে প্রেয়সীকে ফিরে পান নেদারল্যান্ডস কিংবদন্তি। কিন্তু স্ত্রী ফিরে এলেও বিশ্বকাপে আর ফেরেননি ডাচ কিংবদন্তি। ডাচ গণমাধ্যমগুলোর খবর- স্ত্রীর অনুরোধে বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন ক্রুইফ।

ক্রুইফকে ছাড়াই অবশ্য বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল দুর্দান্ত নেদারল্যান্ডস। বার্সেলোনা কিংবদন্তি থাকলে অবশ্য স্বপ্নের প্রথম শিরোপাটা হয়তো পেতে পারতো ডাচরা। কিন্তু ফাইনালে আর্জেন্টিনার সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। পুরো আসরে দাপুটে ফুটবল খেলা আধুনিক ফুটবলের জনক নেদারল্যান্ডস টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে এসে হেরে যায়। তবে বুয়েন্স এয়ার্সে সেই লড়াইয়ে দারুণ একটা ম্যাচ উপহার দিয়েছিল ডাচরা।

ওই আসরেই হয়তো ডিয়েগো ম্যারাডোনার অভিষেক হতে পারতো। কিন্তু বয়স কম হওয়ার কারণে আর্জেন্টিনা কোচ মেনোত্তি সিজার লুইস তাকে দলে রাখেননি। তবে ম্যারাডোনা না থাকলেও আসরের শুরু থেকেই হট ফেভারিট ছিল শক্তিশালী আর্জেন্টিনা। বাজির দরে কেন তারা এগিয়ে ছিল সেটা আর্জেন্টাইনরা ঘরের মাঠে বিশ্বমঞ্চে বুঝিয়ে দিয়েছে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে।

আর্জেন্টিনার এই স্বপ্নযাত্রার প্রধান সারথি ছিলেন মারিও কেম্পেস। প্রতি ম্যাচে গোল করাটা এক প্রকার নিয়মে পরিণত করে ফেলেছিলেন এই কিংবদন্তি। পুরো আসরে সর্বোচ্চ ছয় গোল করে গোল্ডেন বুট জিতে নিয়েছিলেন তিনি। ফাইনালেও কেম্পেসের গোলে শুরুতে লিড নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে ডিক নান্নিনগার গোলে সমতায় ফেরে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। ওই সময় দুই গোল করে ৩-১ ব্যবধানে ফাইনাল ও ট্রফি জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। জোড়া গোল করে অবধারিতভাবে ম্যাচের নায়ক বনে যান কেম্পেস।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে আরো একটি বিতর্ক ছিল। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়ের বিকল্প ছিল না আর্জেন্টিনার সামনে। সেই আর্জেন্টাইনরা পেরুকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৬-০ গোলে। পরে অভিযোগ ওঠে ল্যাটিন দুই দেশের লড়াইটা আসলে পাতানো ম্যাচ ছিল।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.