আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে সাকিবের ভিডিও বার্তা

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দেশজুড়ে যে আন্দোলন করছেন, তাতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, 'এই (নিরাপদ সড়কের) দাবি শুধু ছাত্রদের দাবি হওয়া উচিত নয়, এটা পুরো বাংলাদেশের সব মানুষের দাবি। আমি ছাত্রদের এই যুগান্তকারী আন্দোলনের জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং কারণ তোমরা আমাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছো।'

শুক্রবার সন্ধ্যা নিজের সামাজিক যোগাযোগের পাতায় সাকিব এ প্রসঙ্গে আরো একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি ছাত্রদেরকে আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান এবং বলেন যে, 'তোমাদের দাবি পূরণ হয়েছে এবং হচ্ছে। ব‍্যত‍্যয় ঘটলে আমাকে পাবে তোমাদের সাথে।'

কিন্তু সাকিবের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের পর সাকিবের ফেসবুক পাতায় প্রচুর সমর্থক তার সমালোচনা করেন। এক পর্যায়ে সাকিব পোস্টটি সরিয়ে নতুন ভিডিও বার্তা দেন।

সাকিব ভিডিও বার্তার শুরুতে সালাম দিয়ে বলেন, 'আমি প্রথমেই বাংলাদেশের সকল ছাত্রকে তাদের যুগান্তকারি আন্দোলনের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি তোমাদের এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি।'

তিনি বলেন, 'তোমাদেরকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আরো বলতে চাই এটা শুধু ছাত্রদের দাবি হওয়া উচিত নয়, এটা সারা বাংলাদেশের মানুষের দাবি হওয়া উচিত। কারণ প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনা অনেক হচ্ছে এবং অনেক প্রাণ ঝড়ে যাচ্ছে। সুতরাং এটা আমাদের কারোরই কাম্য নয়।'

নিজের সন্তানের কথা উল্লেখ করে সাকিব বলেন, 'আমার সন্তান আছে, যারা ভিডিওটি দেখছেন তাদেরও অনেকের সন্তান আছে, পরিবার আছে; আমরা সবাই চায় আমাদের সন্তানরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করুক। সে দিক থেকে চিন্তা করলে এই দাবিটা বাংলাদেশের সব মানুষের হওয়া উচিত। এ কারণেই আমি বাংলাদেশের সব ছাত্রকে ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তোমরা আমাদের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছো।'

এরপর সাকিব বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত আছেন। তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছেন এবং করছেন। তা বাস্তবায়ন করতে হয়তো একটু সময় লাগবে। আমাদের উচিত হবে, সকল ছাত্রকে বুঝিয়ে তাদের স্কুলে ফেরত পাঠানো এবং পড়াশোনায় মনোনিবেশ করানো।'

সাকিব বলেন, 'এই দাবি যদি পূরণ না হয় বা আন্দোলন আবার করতে হয়, তোমরা আমাকে তোমাদের পাশে পাবে, এই বিষয়ে তোমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি। আশা করি তোমরা আমার বার্তাটি বুঝতে পারছো। কারণ আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে আরো ভালো ও আরো নিরাপদ হিসেবে গড়ে তুলতে। ধন্যবাদ সবাইকে।'

উল্লেখ্য, গত রোববার ঢাকার কুর্মিটোলার হোটেল র‍্যাডিসন ব্লুর সামনে জাবালে নূরের দুটি বাস প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর উঠিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান দুজন শিক্ষার্থী। এরপর থেকেই সহপাঠীদের মৃত্যুর বিচার চেয়ে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। শিক্ষার্থীরা গত তিন ধরে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে এবং পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবিসহ এমপি, মন্ত্রীদের গাড়ির লাইসেন্স ও বৈধতার কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখছে। এ নিয়ে সরকারের উচ্চ মহল এরই মধ্যে তাদের অস্বস্তি প্রকাশ করেছে।