ভারত-পাকিস্তান মহারণ আজ

হংকংয়ের বিপক্ষে হারতে হারতে জিতে যাওয়ার স্মৃতি নিয়ে আজই আবার মাঠে নামছে ভারত। অর্থাৎ পরপর দুদিন দুই ওয়ানডে খেলতে নামছেন রোহিত শর্মারা। এশিয়া কাপের আজকের ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। এই মহারণের আগে দুই দল থেকেই শোনা গেছে জেতার আশাবাদ।

প্রতি বছরই এশিয়া কাপের মূল আকর্ষণ থাকে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মাঠের লড়াই। রাজনৈতিক বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কের কারণে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচেও থাকে চরম উত্তেজনা। যে উত্তেজনার কমতি হবে না আজও। ম্যাচটি আরব আমিরাতে বলে দুই দলের দর্শক সমর্থনও থাকবে তুঙ্গে।

রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে দুই দেশের কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হচ্ছে না এক দশকের বেশি সময় ধরে। এই দীর্ঘ সময়ে কেবল বহুজাতিক আয়োজনে প্রতিপক্ষ হয়েছে দেশ দুটি। এই দশ বছরে সাত ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে ভারতের কাছে পাঁচটিই হেরেছে পাকিস্তান। জয় মাত্র দুটিতে। এর একটি এসেছে এশিয়া কাপে। অন্যটি গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে।

ভারত-পাকিস্তানের সর্বশেষ ম্যাচও ওই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। যেখানে অসাধারণ ব্যাটিং ও বোলিং পারফর্মে ভর করে ভারতকে উড়িয়ে দেয় পাকিস্তান। কিন্তু সেই ইতিহাস এশিয়া কাপের আজকের ম্যাচে কোনো কাজে লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ।

এশিযা কাপে মুখোমুখি হওয়ার আগে দুই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে দুই দলের। পাকিস্তান এশিয়া কাপ শুরু করেছে হংকংকে উড়িয়ে। আর ভারত একই দলের বিপক্ষে প্রায় শিকার হয়ে যাচ্ছিলো ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটনের। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি বটে, তবে দারুণ এক ধাক্কা খেয়েছে ভারত। সেই ধাক্কা সামলে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামতে প্রস্তুত তারা।

পরের ধাপে উত্তরণের প্রশ্নে এই ম্যাচটি গুরুত্বহীন। কারণ দুই দল এরই মধ্যে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উন্নীত হয়েছে। আজকের ম্যাচটি কেবলই গ্রুপসেরা নির্ধারণের উপলক্ষ্য হয়ে উঠেছে।

কিন্তু প্রতিপক্ষ যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান; সেহেতু পুরো টুর্নামেন্টের চেয়ে এই ম্যাচ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে এবং হচ্ছেও। এই ম্যাচের জয়-পরাজয়ে টুর্নামেন্টের কোথায় কী পরিবর্তন এলো, তাতে খুব কম দর্শকেরই নজর থাকবে। তারা বরং তাকিয়ে থাকবেন ম্যাচে দুই দলের ফলাফলের দিকে।

পাকিস্তান ঐতিহ্যগতভাবেই নির্ভর করছে তাদের পেস আক্রমণের উপর। সঙ্গে তাদের ব্যাটিংও এখন অসাধারণ। পাকিস্তানের নির্ভরতার সবচেয়ে বড় নাম মোহাম্মদ আমির ও হাসান আলি। সঙ্গে আছেন ফখর জামান, ইমাম উল হক, বাবর আজম ও সরফরাজ আহমেদরা। এদের যে কেউ যে কোনো মুহূর্তে ম্যাচের ফলাফল উল্টে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন।

পক্ষান্তরে ভারতের প্রধান ভরসা তাদের ব্যাটিং। যেখানে রোহিত শর্মা অবশ্যই এক নম্বর নাম। বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে ভারতের প্রধান ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি তাকে সামাল দিতে হচ্ছে অধিনায়কের দায়িত্বও। টানা ক্রিকেট খেলার ধকল সামলাতে বিশ্রামে আছেন কোহলি। রোহিতের সঙ্গে ভারতকে টেনে তুলার দায়িত্ব থাকবে শেখর ধাওয়ান, আম্বাতি রাইডুদের উপর।

বল হাতে ভুবনেশ্বর কুমার যদিও তাদের প্রধান ভরসা, কিন্তু হংকংয়ের বিপক্ষে তিন ছিলেন একেবারে সাধারণ। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে প্রধান বোলার এমন পারফর্ম নিঃসন্দেহে দুশ্চিন্তায় রাখছে ভারতকে। হংকংয়ের বিপক্ষে অভিষেকেই তিন উইকেট নিয়েছেন খলিল আহমেদ। বাঁহাতি এই পেসার পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন।