পাকিস্তানকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

পাকিস্তানকে ৩৭ রানে উড়িয়ে এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের ফাইনালে উঠে গেলো বাংলাদেশ। যা গত চার এশিয়া কাপের মধ্যে বাংলাদেশের তৃতীয় ফাইনাল। বুধবারের ম্যাচ রঙ বদলেছে ক্ষণে ক্ষণে। কখনো তা হেলে গেছে বাংলাদেশের দিকে। কখনো আনুকূল্য দিয়েছে পাকিস্তানকে। রঙ বদলের খেলায় শেষ পর্যন্ত রঙিন হয়েছে বাংলাদেশ আর এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান।

শুক্রবারের ফাইনালে হয়তো পাকিস্তানকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে আশা করছিলো ভারত। কারণ তাদের সাথে ভারতের এখনকার ম্যাচ মানেই যে ভারতের নিরঙ্কুশ বিজয়! ভারতের আশা যদি সত্যিই তা হয়ে থাকে, তবে বাংলাদেশের জয়ে তাদের বড়সড় এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনাই ঘটলো! তবে এর মাধ্যমে ফাইনাল হয়তো আরো জমজমাট হয়ে উঠতে পারে।

পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য ছিলো ২৪০ রান। জবাব দিতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের কাছে প্রথম ওভারেই ফখর জামানকে হারায় তারা। পরের ওভারে মোস্তাফিজ বিদায় করেন বাবর আজমকে। ১৮ রানে সরফরাজ আহমেদও ধরেন ড্রেসিংরুমের পথ। শুরুর এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি পাকিস্তান।

চতুর্থ উইকেটে ইমাম উল হক ও শোয়েব মালিক কিছুটা বিপদে ফেলেছেন বাংলাদেশকে। গড়েছেন ৬৭ রানে জুটি। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ৭১ রান যোগ করে ইমাম ও আসিফ আলি। এ দুটি জুটির সময় কিছুটা হলেও সংশয়ে ছিলো বাংলাদেশ। প্রথম জুটিটি ভাঙেন সৌম্য সরকার। আসিফকে বিদায় করেন তিনি। পরের জুটিটি এতো বড় হতো না, যদি লিটন দাস আসরের সহজতম ক্যাচ মিস না করতেন। পরে অবশ্য তার স্টাম্পিংয়েই বিদায় নেন আসিফ।

বাংলাদেশের হয়ে অসাধারণ বোলিং করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সাকিব আল হাসান যে এই ম্যাচ খেলেননি, তা প্রায় মনেই করতে দেননি তিনি। স্পিনার হিসেবে তাকে অসাধারণ সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তবে এ দুজনকে ছাড়িয়ে গেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি তুলে নিয়েছেন চারটি উইকেট। 

এর আগে, মুশফিকের ৯৯ এবং মিঠুনের ৬০ রানে ভর করে ২৩৯ রান করে বাংলাদেশ। মাশরাফিদের সামনে সুযোগ ছিলো আরো বেশি রান করার। কিন্তু পুরো ৫০ ওভারও খেলা হয়নি তাদের। পাকিস্তানি বোলাররা এ ম্যাচে ছিলেন দারুণ দাপুটে। সাত বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ২৩৯ রান করাই অবশ্য বিস্ময়কর ছিলো। কারণ টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে ২০ রান উঠার আগেই তারা তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। এশিয়া কাপের আগের চার ম্যাচের মতো এ দিনও টপঅর্ডার গুড়িয়ে যায় তাসের ঘরের মতো।

পরিস্থিতি যখন আরো বিপজ্জনক হতে যাচ্ছিলো, তখনই ঘুরে দাঁড়ান মুশফিক ও মিঠুন। ১৪৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি গড়ে দেয় বাংলাদেশের জয়ের ভিতও। বাংলাদেশের ইনিংসে বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন জুনাইদ খান। মোহাম্মদ আমিরের বদলি হিসেবে এই ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। কিন্তু ম্যাচ শেষে আর তার কথা মনে থাকার কথা নয় দর্শকদের। কারণ হৃদয় যে জয় করে নিয়েছেন মেহেদি-মোস্তাফিজ-মাহমুদুল্লাহরা!