হেন্ডারসন: লিভারপুলের পথপ্রদর্শক

অ্যানফিল্ডের লাল দুর্গে দুই যুগেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন স্টিভেন জেরার্ড। ইংলিশ এই মিডফিল্ডার হয়ে উঠেছিলেন লিভারপুলের পরিপূরক। শেষ পর্যন্ত ক্লাব ফুটবলের নির্মম বাস্তবতা মানতে হয়েছে তাকেও। ২০১৫ সালে শৈশবের ক্লাবের সঙ্গে শেষ হয়েছে জেরার্ডের মধুচন্দ্রিমা। শেষ হয় একটি অধ্যায়।

জেরার্ড ছিলেন লিভারপুলের অধিনায়ক। লাল জার্সির জন্য ক্যারিয়ারের সবটুকু শ্রম, ঘাম ও নিবেদনের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছেন তিনি। অল রেডদের হয়ে জিতেছেন সম্ভাব্য সবকিছু। এভাবেই জেরার্ড হয়ে উঠেছেন লিভারপুলের কিংবদন্তিদের একজন। তার দেখানো পথেই হাঁটছেন জর্ডান হেন্ডারসন।

লাল দুর্গের মশাল এখন হেন্ডারসনের হাতে। তার নেতৃত্বে বহু বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের রুপালি ট্রফি ফেরত এসেছে অ্যানফিল্ডে। মার্সিসাইডের ক্লাবটি আরো একটি অপেক্ষা ঘোচানোর দ্বারপ্রান্তে আছে। প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিততে চলেছে লিভারপুল।

ত্রিশ বছর পর ইংলিশ ফুটবলের রাজদণ্ড হাতে তুলতে যাচ্ছে তারা। এসব অর্জনের মূল নেতৃত্বে ২৯ বছর বয়সী হেন্ডারসন। গত নয় বছরে দলের মধ্যমাঠ তিনি যেভাবে সামলেছেন তা সত্যিই বিস্ময়কর। যদিও মোহাম্মদ সালাহ, ভার্জিল ফন ডাইকদের মতো তারকাদের ছায়াতলে থাকতে হয়েছে তাদের।

এই হেন্ডারসনকে আলোতে আনতে চাইছেন ক্লাবের সাবেক অধিনায়ক জেরার্ড। উত্তরসূরিকে লিভারপুলের ‘রোল মডেল’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন ইংলিশ কিংবদন্তি। জেরার্ড বলেছেন, ‘ও চমৎকার একজন মানুষ; বিশ্বসেরা মিডফিল্ডারদের একজন। যা কিছু অর্জন হয়েছে ও সেগুলোর যোগ্য দাবিদার। ও তরুণদের কাছে সঠিক আদর্শ।’

হেন্ডারসন কেন রোল মডেল সেটার বিশদ ব্যাখ্যাও আছে জেরার্ডের কথায়, ‘মাঠে এবং মাঠের বাইরে হেন্ডারসন নিঃস্বার্থ একজন মানুষ। এই খেলাটাই ওর স্বপ্ন। যা ওকে জুগিয়েছে মানসিক শক্তি। আমি সবসময়ই ওর প্রশংসা করি। কারণ দলের জন্য ও যেভাবে ওর কাজটা করেছে সেটা প্রশংসার দাবি রাখে। ফুটবলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যক্তি হিসেবে ও প্রতিনিয়ত উন্নতি করেছে।’

২০১১ সালে ইংলিশ আরেক ক্লাব সান্ডারল্যান্ড থেকে লিভারপুলে যোগ দিয়েছিলেন হেন্ডারসন। চার বছর পর তার কাঁধে পরেছে অল রেডদের নেতৃত্বের জোয়াল। শেষ হয় জেরার্ড যুগ, লিভারপুলে শুরু হয় হেন্ডারসন অধ্যায়ের। যা এখনো চলছে। শুধু ক্লাবেই নয়, জাতীয় দল ইংল্যান্ডেও এই দুজন ভাগাভাগি করেছেন ড্রেসিংরুম।

পুরো সময়টাতেই হেন্ডারসনকে স্নেহের পরশে আগলে রেখেছেন জেরার্ড। সেটা স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া তার সাক্ষাৎকারেও বোঝা গেল, ‘আমার মনে আছে, যখন ও সান্ডারল্যান্ড থেকে লিভারপুলে এসেছিল তখন ওর পরিবার আমাকে বলেছিল যাতে ওকে দেখে রাখি এবং আমিও সেটাই করেছি। স্নেহ-ভালাবাসায় ওকে আগলে রেখেছি।’