আর্সেনালকে ডোবালেন ব্রাজিলিয়ান তারকা

করোনাভাইরাস বিরতি শেষে ফুটবল ফিরল ইংল্যান্ডে। ফেরার রাতেই ইংলিশ ফুটবলে মহারণ। ম্যানচেস্টার সিটি বনাম আর্সেনাল লড়াই। কিন্তু ইতিহাদ স্টেডিয়ামে লড়াইটা জমেনি। আর্সেনালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে সিটি। লিগের চলতি আসরে এটা পেপ গার্দিওলার দলের ১৯তম জয়। এই জয়ে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকল সিটি। তাদের সমান ২৯ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট শীর্ষে থাকা লিভারপুলের।

বুধবার রাতে সিটির মাঠে আর্সেনালকে ডুবিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিড লুইজ। স্বাগতিকরা প্রথম যে দুটি গোল পেয়েছে দুটোই হয়েছে তার ভুলে। লুইজের প্রথম ভুলটা ছিল প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে। ক্রস থেকে পাওয়া বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। সুযোগ বুঝে বল পেয়ে দারুণ এক শটে আর্সেনালের জাল কাঁপান রহিম স্টার্লিং।

বিরতি থেকে ফিরেই দ্বিতীয় ভুল করে বসেন লুইজ। নিজেদের ডি-বক্সে সিটি ফরওয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজকে ফেলে দেন ব্রাজিলিয়ান অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। সরাসরি লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়া হন লুইজ। আসের্নাল শাস্তি পায় পেনাল্টির। সুযোগ কাজে লাগান কেভিন ডি ব্রুইনে। করেন গোল। দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমে আর্সেনালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন ফিল ফোডেন।

এই গোলটা হতে পারতো পরিবর্তিত স্ট্রাইকার সার্জিও অ্যাগুয়েরোর। অতিথিদের গোলমুখে শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পোস্টে লেগে বল ফিরে আসে। ফিরতি শটে গোল করেন ফোডেন। বড় জয় নিশ্চিত হয় সিটির। কিন্তু স্বাগতিকদের জয়োৎসব কিছুটা হলেও মাটি হয়ে গেছে এরিক গার্সিয়ার ইনজুরিতে। সতীর্থ গোলরক্ষক এডারসনের আঘাতে চোট পান তিনি। স্ট্রেচাড়ে চড়ে মাঠ ছাড়তে হয় গার্সিয়াকে।

ইনজুরি ভুগিয়েছে আর্সেনালকেও। এ কারণে ম্যাচের প্রথমার্ধেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে তারা। ২৪ মিনিটের মধ্যে দুজন ফুটবলার হারিয়েছে উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি। দশ মিনিটে গ্রানিত জাকা ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়ে গেছেন। একটু পর তার পথেই হাঁটলেন পাবলো মারি। এরপরই মাঠে নামেন লুইজ।

ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের মাঠে নামাটাই কাল হলো আর্সেনালের জন্য। ম্যাচ শেষে দলের হারের দায় নিজের ওপরই চাপিয়েছেন লুইজ।

লুইজের লাল কার্ডের পর দশ জনের দল নিয়ে দারুণ লড়াই করেছিল আর্সেনাল। কিন্তু হার ঠেকাতে পারেনি তারা। ম্যাচ ১১ জন নিয়ে শেষ করতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটিও। দায়টা অবশ্য কোনো ফুটবলারের নয়। কারণ ৮২ মিনিটেই পঞ্চমবারের মতো খেলোয়াড় পরিবর্তন করে ফেলেন সিটি কোচ গার্দিওলা। তাই গার্সিয়ার বদলে কাউকে নামাতে পারেননি স্প্যানিশ কোচ।

ম্যাচ ফ্যাক্টস:

ইংলিশ লিগে ‘বড়’ দলগুলোর মাঠে টানা ২৬ ম্যাচ জয়জীন থাকল আর্সেনাল।

ইংলিশ লিগের এই মৌসুমে ২৫ গোলে অবদান আছে ডি ব্রুনের (অ্যাসিস্ট ১৬টি, গোল ৯টি)। যা কোনো ফুটবলারের সর্বোচ্চ।

সবধরনের প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে ৫০তম গোল করেছেন স্টার্লিং (সিটি ও লিভারপুল মিলিয়ে)।

এই মৌসুমে লিগে চারটি পেনাল্টি দিয়েছেন লুইজ। যা লিগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে বিব্রতকর এই রেকর্ড গড়েছেন আরো ছয় জন!

মিকেল আর্তেতার অধীনে লিগের ১১ ম্যাচে তিনটি লাল কার্ড দেখল আর্সেনাল। সাবেক কোচ ‍উনাই এমেরির অধীনে আর্সেনাল তিনটি লাল কার্ড দেখেছে ৫১ ম্যাচ খেলে।

লিগে প্রথম ১০০ ম্যাচের মধ্যে ৪৬টিতে গোল হজম করেননি সিটি গোলরক্ষক এডারসন। সাফল্যের দিক থেকে তিনি চেক (৫৯) এবং রিয়েনার (৫৪) পরই আছেন।

ইংলিশ লিগে এদিন ১০০তম ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সিটির তিন ফুটবলার ইকেই গান্ডোগান, রহিম স্টার্লিং ও এডারসন।