রোনালদো-ইব্রা-কেনদের পক্ষে মরিনহোর ‘পেনাল্টি’

পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে যেখানেই গেছেন সাফল্য পেয়েছেন পর্তুগিজ কোচ হোসে মরিনহো। প্রতিটি দলেই তুরুপের তাস হিসেবে একজনকে পেয়েছেন ‘স্পেশাল ওয়ান’। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিছ, দিদিয়ের দ্রগবা তাদের মধ্যে অন্যতম। টটেনহাম হটস্পারে তেমনই একজনকে পেয়েছেন মৌ, তিনি হ্যারি কেন।

ইনজুরির কারণে ইংলিশ এই স্ট্রাইকার দীর্ঘ ছয় মাস মাঠের বাইরে ছিলেন। গেল শুক্রবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে বিগ ম্যাচে ফিরেছেন কেন। কিন্তু তার ফেরাটা সুখের হয়নি। ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে স্পার্স অধিনায়ক খেলেছেন নিজের ছায়া হয়ে। তকে ঘিরে বয়ে গেছে সমালোচনার ঝড়। তাতে ক্ষেপেছেন মরিনহো।

কেনকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছেন আর্সেনালের সাবেক তারকা ফুটবলার পল মানমস। তাকে ধুয়ে দিয়েছেন মরিনহো। সোমবার রাতে তিনি বলেছেন, ‘অনেক মানুষ ওকে (কেন) পছন্দ করে। আমিও করি। ছয় মাস পর হ্যারি (কেন) প্রথম ম্যাচ খেলেছে। আপনি (পল) ওর এক ম্যাচ দেখেই মূল্যায়ন করে ফেলেছেন?

পলের বিশ্বাস ইব্রা, রোনালদো, দ্রগবাদের কাছ থেকে সেরা বের করে আনলেও কেনের কাছ সেরা পারফর্মটা বের করতে পারবেন না মরিনহো। কথাটা নিতে পারেননি পর্তুগিজ কোচ, ‘ম্যাচে কি ও অনেক সুযোগ পেয়েছে? নাকি অন্য স্ট্রাইকাররা পেয়েছে। আপনি এভাবে বলতে পারেন না। হ্যারিকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য আমাকে কিছুটা অবাক করেছে।’

গেল জানুয়ারিতে ইনজুরিতে পড়ার আগে ১০ ম্যাচে সাত গোল করেছেন কেন। সমালোচকদের সেদিকে নজর দিতে বললেন মরিনহো, ‘পল এবং অন্যরা হঠাৎ করেই হ্যারিকে নিয়ে গবেষণা করছেন। ওকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করার আগে শুরু থেকে ওর রেকর্ড ও পারফরম্যান্স বিবেচনা করতে হবে। হ্যারি ছয় মাস খেলেনি। ও ৯০ মিনিট খেলেছে এটাই সবচেয়ে ইতিবাচক।’

কেনের হয়ে পেনাল্টি নেওয়া ক্ষ্যাপা মরিনহো এরপর সামনে আনলেন পুরনো শিষ্যদের সব গোলের রেকর্ড। তিনি বলতে থাকলেন, ‘আমার অধীনে দ্রগবা চার মৌসুম খেলে ১৮৬টি গোল করেছে। প্রতি মৌসুমে গড়ে ৪৬টি গোল করেছে ও। আমি রোনালদোর কথা বলতে পারি, ও এখন জুভেন্টাসে খেলছে। আমার কাছে ও খারাপ ছিল না। আমার অধীনে তিন মৌসুম খেলে ১৬৮টি গোল করেছে। প্রতি মৌসুমে ওর গোল গড় ৫৬।’

পর্তুগিজ কোচ যোগ করলেন, ‘আমি করিম বেনজেমার কথা বলতে পারি। আমার অধীনে ও তিন মৌসুম খেলেছে। সবসময় শুরুর একাদশে ছিল না। তবু ৭৮টি গোল করেছে। গড়ে এক মৌসুমে ২৬ গোল করেছে। আমি (ডিয়েগো) মিলিতোর কথা বলব, ও এক মৌসুম খেলেই ৩০টি গোল করেছে। আমি আরেকজনের কথা বলব যে আমার সঙ্গে দেড় বছর ছিল। যদিও ও বড় ইনজুরিতে ছিল। আমি লম্বা ছেলেটাকে ‘‘জ্লাতান’’ (ইব্রাহিমোভিচ) বলে ডাকতাম। ৫৮ গোল করেছে ও। মৌসুমে ওর গড় গোল ছিল ২৯টি।’

পুরনো শিষ্যদের গোলের পরিসংখ্যান বলার পরই সেই পলের কাছে ফিরে এলেন মরিনহো, ‘কাজেই, প্রিয় পল। আপনাকে আমি অনেক সম্মান করি। আপনাকে বলে দিচ্ছি, হ্যারি কেনের কোনো সমস্যা নেই। ও গোল করতে পারে। বিশেষ করে ও যখন ফিট ও ফুরফুরে মেজাজে থাকে। অন্যরা যারা সমালোচনা করছেন তাদেরকেও আমি শ্রদ্ধা করি।’