ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন-গান

ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সেনা কর্মকর্তা মোহসিন ফাখরিজাদেহকে হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছিলো স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত একটি মেশিন-গান, এবং এই অস্ত্রটিতে ছিলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এমন দাবি করেছে ইরানের সেনাবাহিনী।

বিবিসির প্রকাশিত এক খবরে এমন তথ্য জানানো হয়েছে, এবং এই তথ্যের সত্যাসত্যি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

গত ২৭ নভেম্বর মোহসেনকে তেহরানের বাইরে এক গাড়িবহরে থাকার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ি করেছে। কিন্তু ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ফাখরিজাদেহকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে?

এখন পর্যন্ত ফাখরিজাদেহের হত্যা নিয়ে ইরান যে কটি দাবি করেছে, তা বেশির ভাগই বিরোধপূর্ণ। মৃত্যুর আগে তিনি আসসার্দ নামের একটি শহর দিয়ে ভ্রমণ করছিলেন।

ইরান দাবি করেছে, ফাখরিজাদেহের মৃত্যুর দিন তার দেহরক্ষীদের সাথে কয়েকজন বন্দুকধারীর বন্দুকযুদ্ধ হয়েছিলো।

ইরানের একটি সংবাদ মাধ্যমে একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে “অন্তত তিন থেকে চারজন ব্যক্তি ছিলো, যাদেরকে সন্ত্রাসী বলে মনে হয়েছে, তারা মারা গেছে।” এবং ঘটনাস্থলে একটি নিশান পিকআপ ভ্যান বিস্ফোরিত হয়েছে।

ফাখরিজাদেহের জানাযায় ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান বলেছেন যে “বিশেষ উপায়ে” এবং “ইলেকট্রিক মাধ্যম” ব্যবহার করে তাকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।

ইরানের সেনাবাহিনীর ডিপুটি কমান্ডার জেনারেল ফাদাভি বলেছেন, ফাখরিজাদেহকে গুলি করা মেশিন-গানটি একটি নিশান পিক-আপ ভ্যানে স্থাপন করা ছিলো এবং এটিকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ফাখরিজাদেহের দেহ চিহ্নিত করে গুলি করা হয়। তিনি দাবি করেন, এতে কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়েছে।

ফাখরিজাদেহ কেন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন?

মোহসেন ফাখরিজাদেহ ইরানের ডিফেন্সিভ ইনোভেশন এবং রিসার্চের প্রধান ছিলেন। ইসরায়েল ও পশ্চিমা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর একাধিক সূত্রের দাবি, ফাখরিজাদেহ ছিলেন ইরানের পারমাণবিক উদ্যোগের প্রধান ব্যক্তি।

“প্রোজেক্ট আমাদ” নামে ইরান একটি পারমাণবিক উদ্যোগ পরিচালনা করে বলে ধারণা করা হয়। পশ্চিমা সূত্রগুলোর দাবি, এই উদ্যোগে পরমাণবিক বোমা বানানোর চেষ্টা করে ইরান।

এই উদ্যোগটি ২০০৩ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়, দাবি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির।

২০১৮ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেন যে তার দেশ এমন কিছু দালিলিক প্রমাণ পেয়েছে, যাতে তারা নিশ্চিত যে ফাখরিজাদেহ গোপনে বন্ধ করা উদ্যোগটি চালিয়ে নিচ্ছিলেন।

ইরান দাবি করে, তাদের পারমাণবিক শান্তিপূর্ণ একটি প্রচেষ্টা এবং এতে বোমা বা পারমাণবিক অস্ত্রো বানানোর কোনো ইচ্ছা নেই।