চিকিৎসকদের সংক্রমণ-মৃত্যুও বাড়ছে, সেবা নিয়ে ‘শঙ্কা’

করোনার সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, মৃত্যুর হারও কম নয়। হাসপাতালগুলোতে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর স্রোতে চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

চিকিৎসক ও নার্স, প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জানায়, করোনা এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ১৯৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক ২ হাজার ৯০৮, নার্স ১ হাজার ৯৯৬ এবং স্টাফ ৩ হাজার ২৯৩ জন। আক্রান্তের হার রাজধানীতে সর্বোচ্চ।

এ ছাড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ দিনে করোনায় মারা গেছেন আরো ৬ জন চিকিৎসক। এ নিয়ে সারাদেশে মৃত্যু হলো ১৩৭ চিকিৎসক ও ৩ জন ডেন্টাল সার্জনের।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দুই বছরের মধ্যে এত সংখ্যক চিকিৎসকের মৃত্যু হলো, সামনে এই তালিকা আরো দীর্ঘ হবে। এটি দেশের জন্য, চিকিৎসা সেবার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

করোনাকালে চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালন, ফাইল ছবি

চিকিৎসক-নার্সদের সংক্রমণের হার অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. সুলতানা সাহানা বানু। নতুন ভ্যারিয়েন্টে চিকিৎসকরা বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের এই প্রধান বলেন, করোনা ইউনিটে দায়িত্ব শেষে চিকিৎসক-নার্সদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেই দায়িত্বে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালনের মতো পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে ডা. সুলতানা বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের হার অনেক বেশি হওয়ায় সমস্যা জটিল হয়ে পড়ছে। এটি চলতে থাকলে স্বাস্থ্য খাত ভেঙে পড়বে এক সময়।

করোনাকালে নার্সদের দায়িত্ব পালন, ফাইল ছবি

পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসক-নার্সদের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়াতে হবে। ল্যাবে দায়িত্ব পালনসহ কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থায় সমন্বয় আনতে হবে।

করোনায় প্রথম চিকিৎসকের মৃত্যু হয় গত বছরের ১৫ এপ্রিল, সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালের ডা. মঈন উদ্দীন আহমদ। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হন ডা. গাজী সাইফুল আলম চৌধুরী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।