বাংলাদেশে টিকার সরবরাহ ‘নিরবচ্ছিন্ন’ রাখার আশ্বাস চীনের

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকার সরবরাহ বাংলাদেশে ‘নিরবচ্ছিন্ন’ রাখার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এ ক্ষেত্রে ঢাকাকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার কথা জানিয়েছে বেইজিং। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এক টেলি সংলাপে এভাবেই আশ্বস্ত করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ফাইল ছবি

গতকাল শুক্রবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, ফোনালাপে ঢাকার অনুরোধে দ্বিতীয় দফায় উপহার হিসেবে আরো ৬ লাখ ডোজ টিকা দেয়ার ঘোষণা দেন চীনা স্টেট কাউন্সির ওয়াং।

এদিকে, বাংলাদেশে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের জন্য বেইজিংকে অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। এ ব্যাপারে নিজেদের টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার আশ্বাস দেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ব্রাজিল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের কথা উল্লেখ করেন ওয়াং। এসব দেশে টিকা সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সহযোগিতার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।

ঢাকায় চীনা উপহারের টিকার প্রথম চালান, ফাইল ছবি

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বিতীয় দফায় আরো ৬ লাখ টিকা ঢাকাকে উপহার দিচ্ছে বেইজিং। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে বিষয়টি জানিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বেইজিং। ঢাকার জরুরি ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ টিকা সরবরাহের ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। টিকা উপহারের এই ঘোষণা চীনের বন্ধুত্বের নিদর্শন।

প্রথম দফায় সিনোফার্মের ৫ লাখ করোনা টিকা উপহার দেয় চীন, যা এডি সিরিঞ্জসহ গত ১২ মে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। এর মাত্র ৯ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফায় উপহারের ঘোষণা আসে।

অন্যদিকে, চীনা প্রতিষ্ঠান আনুই জিফেই লংকম বায়ো-ফার্মাসিউটিক্যাল তাদের করোনা টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। সেই সাথে যৌথ গবেষণা ও উৎপাদনে কারখানা স্থাপনে আগ্রহী তারা।

চীনা করোনা টিকা, ফাইল ছবি

জানা গেছে, এসব বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা করতে দু-এক দিনের মধ্যেই ঢাকায় আসছেন আনুই জিফেই’র প্রেসিডেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পরীক্ষা শেষে ঢাকায় উৎপাদিত টিকার একাংশ এদেশের দরিদ্র মানুষ পাবে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে।

প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার টিকা চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। টিকার ৩ কোটি ডোজ পেতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি করে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

ভারত সরকার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় অগ্রিম টাকা পরিশোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৭০ লাখ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে টিকাদান কর্মসূচি আটকে যাওয়ায় বিকল্প দেশ হিসেবে চীন ও রাশিয়া থেকে দ্রুত টিকা আনার চেষ্টা করছে সরকার।