‘আমরা ওয়েল প্রিপেয়ার্ড, লক্ষ্য জিরো ডেথ’

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Yaas) মোকাবেলা প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ওয়েল প্রিপেয়ার্ড, আমাদের লক্ষ্য হলো জিরো ডেথ।’ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সম্ভাব্য’ ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সংক্রান্ত পলিসি কমিটির সভায় আজ শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর আগে আমরা সুপার সাইক্লোন ফণী, বুলবুল, আম্পান মোকাবেলা করেছি। সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করেছি। এবারো আমরা সবাই মিলে কাজ করব। শতভাগ মানুষকে উপকূলীয় এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার মাধ্যমে এবার আমরা মৃতের সংখ্যা শূন্যের ঘরে নামিয়ে আনতে চাই। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তত আছে সরকার। ‘আমরা ওয়েল প্রিপেয়ার্ড, আমাদের লক্ষ্য জিরো ডেথ’।

এ সময় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদসহ ক্যাবিনেট ডিভিশনের প্রতিনিধি এবং স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়, এলজিআরডির প্রতিনিধি, রেড ক্রিসেন্ট, স্পারসোসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যা ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। এ অবস্থায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূল দিয়ে আগামী ২৬ মে নাগাদ অতিক্রম করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করে আমরা আগেও বিশ্ব দরবারে প্রসংশিত হয়েছি। এবারো মৃতের সংখ্যা শূন্য রেখে আমরা উদাহরণ তৈরি করতে চাই। এ লক্ষ্যে কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে না চাইলেও জোর করে বা যে করে হোক তাকে নিয়ে আসতেই হবে। যাতে তার জীবন রক্ষা পায়।

এ সময় ডা. এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী বা বুলবুল মোকাবেলায় আমরা যে সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করেছিলাম, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে তার চেয়ে তিন গুণ বেশি আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করেছি। প্রায় ২৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ ১৪ হাজার ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল।

তিনি বলেন, এবারো আমরা করোনার সংক্রমণ এড়াতে তিন গুণ বেশি আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করব। এ ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে। যদি কোনো করোনা রোগী পাওয়া যায় তাহলে তাকে আশ্রয়কেন্দ্রে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। যাতে আশ্রয়কেন্দ্র সংক্রমণ ছড়াতে না পারে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান আরো জানান, ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় নগদ টাকার সহায়তা পাঠানো হয়েছে। প্রচুর শুকনা খাবারও মজুদ আছে। কালকের (রোববার) মধ্যে এগুলো এলাকায় পৌঁছে যাবে। পরিস্থিতি বুঝে আগামীকাল আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা করা হবে।

এর আগে শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানান, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দেওয়া হচ্ছে, তা শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। এ বিষয়ে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে সতর্ক থাকতে বলা হবে। তবে এই মুহূর্তে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।