অভিষেকেই কনওয়ের ইতিহাস এবং ইংলিশদের প্রতিরোধ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের প্রথম দিন দাপট দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ড। অভিষিক্ত ডেভন কনওয়ের শতকের ওপর দাঁড়িয়ে বড় সংগ্রহের আভাস দেয় কিউইরা। সেটা ওই পর্যন্তই থাকল। দ্বিতীয় দিন কনওয়ে ঠিকই দ্বিশতক হাঁকালেন; কিন্তু ধসে পড়ল কিউইরা। ২৮৮ রানে তিন উইকেটে থাকা নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেল ৩৭৮ রানে।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। ১৮ রানের মধ্যে স্বাগতিক শিবির হারিয়ে ফেলে ওপেনার ডমিনিক সিবলি (০) ও জ্যাক ক্রলির (২) উইকেট। পরে অধিনায়ক জো রুটকে নিয়ে হাল ধরেন আরেক ওপেনার ররি বার্নস। তৃতীয় উইকেটে ৯৩ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে ইংল্যান্ড।

দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দুই উইকেটে ১১১ রান। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এখনো ২৬৭ রান পিছিয়ে আছে ইংলিশরা। অজেয় হাফসেঞ্চুরি করেছেন বার্নস; তার পেছনে হাঁটছেন রুট। ১৩৪ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত আছেন ইংলিশ ওপেনার। ইনিংসে চারটি বাউন্ডারি আছে তার। ১১২ বলে পাঁচটি চারে ৪২ রানে টিকে আছেন রুট।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে তিন উইকেটে ২৪৬ রানে দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। আগের দিনের ১৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি এদিন থেমেছে অল্পতেই। চতুর্থ উইকেটে কনওয়ে-হেনরি নিকোলসের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ১৭৪ রানে। জুটি ভাঙে নিকোলসের বিদায়ে। ১৭৫ বলে চারটি চারে ৬১ রানে আউট হন নিকোলস। তাতেই শুরু উইকেট বৃষ্টি।

নিকোলসের পর একে একে সাজঘরে ফিরে গেলেন বিজে ওয়াটলিং, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, কাইল জেমিসন ও টিম সাউদি। এই পাঁচজনের একজনও যেতে পারেননি দুই অংকে। প্রথমজন করেছেন এক রান। পরের দুজন খুলতে পারেননি রানের খাতা। জেমিসন নয় ও সাউদি আট রানে ফেরেন সাজঘরে। দুজন মিলে খরচ করেন ৪০ বল।

তাতে কিছুটা হলেও দ্বিশতকের পথে এগোতে থাকেন কনওয়ে। তবে ব্যাটিং অর্ডারে আচমকা মড়ক লাগায় অনিশ্চয়তা জেগেছিল তার দ্বিশতক নিয়ে। ৩৩৮ রানে নয় উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ জুটিতে চমক উপহার দিয়েছে কিউইরা। ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে নিল ওয়াগনার খেললেন ওয়ানডে মেজাজে। ২১ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ২৫ রানের ঝড় তোলেন ওয়াগনার।

৪০ রানের জুটি ভেঙেছে দুর্ভাগ্যবশত রান আউটে। তার আগেই আরেক ইতিহাস গড়ে ফেলেন কনওয়ে। ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে তিনিই প্রথম অভিষিক্ত ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। ৩৪৭ বলে কাঁটায় কাঁটায় দুশো রান করেন কনওয়ে। ইনিংস সাজান ২২ চার ও এক ছক্কায়।

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন কনওয়ে। তবে ইংল্যান্ডের মাটিতে অভিষিক্ত কোনো ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ ইনিংস। কনওয়ের আগে ইংল্যান্ডে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি রানের ইনিংসটা ছিল রনজিত সিংজির। ১৮৯৬ সালে অ্যাশেজ সিরিজে ম্যানচেস্টার টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার।

কনওয়ের দ্বিশতকের কীর্তির দিনে অনেকটা আড়ালে চলে গেছেন অলি রবিনসন। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের চার উইকেট নিয়েছেন এই ইংলিশ পেসার। তিনটি শিকার মার্ক উডের। দুই উইকেট নিয়েছেন জিমি অ্যান্ডারসন।