ইউরো ২০২০: এবার দেখা যাবে না যাদের

দরজায় কড়া নাড়ছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২০। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ফুটবলপ্রেমীরা। আগামী ১১ জুন পর্দা উঠছে ইউরো বিশ্বকাপের। তবে রোমাঞ্চ শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। সেই রোমাঞ্চে কিছুটা হলেও ভাটা পড়ল বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতির কারণে। পুরো টুর্নামেন্টে তারা থাকবেন দর্শক সারিতে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব তারকা ফুটবলারকে।

জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ: এই মুহূর্তে বিশ্বসেরা ফুটবলারদের একজন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। ২০১৬ ইউরোর পরপরই অবসরে চলে যান সুইডিস কিংবদন্তি। এরপর নানা সময়ে স্বঘোষিত সিংহের আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরার গুঞ্জন ছড়ায়। অবশেষে তার সুইডেন দলে ফেরার বন্দোবস্ত করেন প্রধান কোচ অ্যান্ডারসন। কিন্তু ফিরেও ফেরা হলো না তার। মৌসুমের শেষ দিকে এসে ইনজুরিতে হাঁটুর পড়েন এসি মিলান স্ট্রাইকার। যা ইব্রাকে ছিটকে দেয় ইউরো টুর্নামেন্ট থেকে।

আর্লিং হাল্যান্ড: আর্লিং হ্যালান্ডের উত্থান বছর দুয়েক হবে। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নরওয়েজান তারকা। আসন্ন ইউরোতে দেখা যাবে না তাকে। অথচ ইনজুরির কোনো সমস্যা নেই তার। তবু হাল্যান্ড মিস করবেন টুর্নামেন্ট। কারণ তার দল নরওয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বের টিকিট পেতে ব্যর্থ হয়েছে। প্লে-অফের সেমিফাইনালে নরওয়ে হেরে যায় সার্বিয়ার কাছে।

সার্জিও রামোস: ইনজুরি ও অফ-ফর্মের কারণে গত মৌসুমটা ভীষণ বাজে কেটেছে রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক সার্জিও রামোসের। মৌসুম শেষে ফের কপাল পুড়ে ইউরো-বিশ্ব-ইউরোজয়ী স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের। রামোসকে ইউরোর দলে নেননি স্পেনের প্রধান কোচ লুইস এনরিকে। এনিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল বিশ্ব ফুটবলে। তবে রামোসকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটা যে সহজ ছিল না সেটা জানান এনরিকে।

জান ওবলাক: এই মুহূর্তে বিশ্বসেরা গোলরক্ষকদের একজন জান ওবলাক। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে এই মৌসুমে লা লিগার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। কিন্তু ক্লাবের স্বপ্নপূরণ করলেও জাতীয় দলের স্বপ্নপূরণ করতে পারেননি তিনি। ওবলাকের দল স্লোভেনিয়া টিকিট পায়নি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের। ওবলাকাকের মতো ইউরোতে দর্শক ভূমিকায় থাকবেন আটালান্টা ফরওয়ার্ড জোসিপ লিসিকও।

ভার্জিল ফন ডাইক: গত বছর বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার দৌড়ে ছিলেন ভার্জিল ফন ডাইক। শেষ অবধি লিওনেল মেসির কাছে হেরে যান তিনি। সদ্য বিদায়ী মৌসুমে আরো ভালো করতে চেয়েছিলেন ফন ডাইক। কিন্তু ইনজুরির কারণে মৌসুমজুড়ে ভুগতে হয়েছে লিভারপুল ডিফেন্ডারকে। মৌসুমের শেষ দিকে এসে ফের হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক। যা তাকে ইউরো থেকে ছিটকে দিয়েছে।

আলেক্সান্ডার-আরনল্ড: ইনজুরির অস্বস্তিতে ছিলেন লিভারপুলের আরেক তারকা আলেক্সান্ডার-আরনল্ড। তাকে ইউরোর দলেও রেখেছিলেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কিন্তু চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত ইউরো থেকে ছিটকে যান এই তারকা ডিফেন্ডার। আরনল্ডের মতো একই পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে আরেক ইংলিশ ডিফেন্ডার জো গোমেজকে। ইউরো টুর্নামেন্টে দুজনকেই মিস করবে ইংল্যান্ড।

আনসু ফাতি: সদ্য বিদায়ী ক্লাব মৌসুমে আগুন ঝরিয়েছেন আনসু ফাতি। শুরুর দিকে বার্সেলোনার হয়ে কয়েকটা রেকর্ডও গড়েছিলেন স্প্যানিশ তরুণ তুর্কি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মৌসুমের শেষ দিকে ইনজুরিতে পড়েন তিনি। ফাতির হাঁটুতে অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করাতে হয়েছে। যা তাকে ছিটকে দিয়েছে ইউরো থেকে। একই কারণে ইউরোতে দর্শক সারিতে চলে গেছেন পর্তুগালের তারকা ফরওয়ার্ড পেদ্রো নেতো।

ইভান রাকিটিচ: ইভান রাকিটিচের এখন ক্যারিয়ারের শেষলগ্ন চলছে। ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের স্বপ্ন ছিল বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ক্যারিয়ার শেষ করার। কিন্তু তাকে হতাশ করেছে কাতালানরা। পুরনো ক্লাব সেভিয়াতে ফেরত যেতে হয় রাকিটিচকে। সেভিয়াতে অবশ্য নিজের সাধ্যমতো পারফর্ম করেছেন তিনি। তবু তাকে ইউরো দলে রাখা হয়নি। কারণ গত বছরেই যে জাতীয় দল থেকে অবসরে চলে গেছেন রাকিটিচ।

জেরমি বোয়াটেং: এবারের ইউরোতে দেখা যাবে না আফ্রিকান বংশোদ্ভূত জার্মান তারকা জেরমি বোয়াটেংকে। তাকে ইউরোর দলে রাখেননি জার্মানির প্রধান কোচ জোয়াকিম লো। তবে বোয়াটেংকে দলে না রাখলেও ইউরোর জন্য অভিজ্ঞ দুই ফুটবলার টমাস মুলার ও ম্যাটস হ্যামেলসকে ডেকে পাঠিয়েছেন জার্মান কোচ। ইউরোতে দেখা যাবে না জার্মানির আরেক তারকা মেসুত ওজিলকে। জার্মানি ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালে অবসরের ঘোষণা দেন বিশ্বজয়ী এই মিডফিল্ডার।

বর্না সোসা: ইউরো টুর্নামেন্টে তার খেলার কথা ছিল ক্রোয়েশিয়া দলের হয়ে। কিন্তু এ বছর জার্মানির নাগরিত্ব নিয়েছেন তিনি। দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়া ক্রোয়াট উইঙ্গার ইউরো বিশ্বকাপে খেলতে পারেন জার্মানদের হয়ে। তাকে দলে নিয়েছেন লো।