চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করল বেলজিয়াম

স্বপ্ন বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে পর্তুগাল। বিশ্বসেরা দল বেলজিয়ামের বিপক্ষে মহারণে আক্রমণেও আধিপত্য ছিল তাদের। কিন্তু ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় সব চেষ্টা মাটি হয়ে গেল। রোববার রাতে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল।

ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোলটি করেছেন থোরগান হ্যাজার্ড। এই হারে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শেষ হয়ে গেল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। আর কাঠখড় পোড়ানো জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। আগামী শুক্রবার জার্মানির মিউনিখে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ইতালির মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম।

যারা কিনা শেষ ষোলোতে অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে অস্ট্রিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে। ইতালির মতো অবশ্য অতোদূর যেতে হয়নি বেলজিয়ামকে। স্পেনের রাজ্য শহর সেভিয়ায় ৪২ মিনিটে থোরগানের দূরপাল্লার বুলেট গতির দারুণ শট আশ্রয় নেয় পর্তুগালের জালে। লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়া বেলজিয়ামকে আর গোলটার শোধ দিতে পারেনি টুর্নামেন্টের শিরোপাধারীরা।

তবে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি পর্তুগাল। ম্যাচের ৫৭ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছে তারা। গোলের উদ্দেশে শট নিয়েছে ২৩টি; যার যার চারটিই ছিল গোলমুখে। অন্যদিকে বেলজিয়াম ছয়টি শট নিয়েছে। লক্ষ্যে একমাত্র যে শটটা ছিল তাতেই হয় বাজিমাত। পিছিয়ে যাওয়ার পরও ম্যাচজুড়ে বেলজিয়ামের বিপদসীমায় ত্রাস ছড়িয়েছে পর্তুগাল।

হয়তো গোলের দেখাও পেতে পারতো। সেটা হয়নি বেলজিয়ানদের মহাপ্রাচীরের কারণে। প্রাচীর ডিঙালে আবার থিবাউট কোর্তায়া নামক মহামানব দেয়াল। রোনালদো-জোতা-ফার্নান্দেজদের ভালোই হতাশ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের এই গোলরক্ষক। তবে সবচেয়ে বেশি নিরাশ হয়েছেন রাফায়েল গুরেরো। ম্যাচের শেষ দিকে তার শট ফিরে আসে বেলজিয়ামের পোস্টে লেগে।

বেলজিয়ামের লিড নেওয়ার আনন্দে কিছুটা ভাটা পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে। চোট নিয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যান মধ্যমাঠের অন্যতম সারথি কেভিন ডি ব্রুইনে। পরে রক্ষণে জোর দেয় বেলজিয়াম। ম্যাচের শেষ দিকে দুই দল শারীরী ফুটবলে মেতে ওঠে। তাতে উত্তেজনা ছড়ায় ম্যাচে। মুখোমুখি হয়ে যান দুই দলের ফুটবলাররা।

পর্তুগালকে একটি এবং বেলজিয়ামকে দুটি হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ম্যাচকর্তা। কিন্তু ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পর্তুগিজরা। শেষ কয়েক মিনিটে গোলের সম্ভাবনা জাগিয়েও কাঙ্খিত ঠিকানায় বল পাঠাতে পারেনি তারা। আগের তিন ম্যাচে পাঁচ গোল করা রোনালদোর সুযোগ এসেছিল সংখ্যাটা বাড়িয়ে নেওয়ার। সতীর্থদেরও সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যদিও ব্যর্থ হলেন সবাই।

অবশ্য পর্তুগাল শূন্যহাতে বিদায় নিলেও চলমান ইউরোটা রোনালদোর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আসরে এখন অবধি গোল্ডেন বুটের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন তিনিই। গেল তিন ম্যাচে রেকর্ড বইয়ে ঝাড় তোলা ‘সিআর সেভেন’ কালও চেষ্টা করেছেন। ভাগ্য সহায় ছিল না বলে ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ ইউরোর নক আউট পর্বের শুরুতেই বিদায় নিতে হলো ৩৬ বছর বয়সী উইঙ্গারকে।