অভিবাসীদের আমরণ অনশন, বেকায়দায় বেলজিয়াম সরকার

বেলজিয়ামে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতির দাবিতে কয়েকশ’ অভিবাসী আমরণ অনশন শুরু করেছেন। জাতিসংঘ বেলজিয়ান সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অবিলম্বে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। বেলজিয়ামে বসবাস করার জন্য বৈধ কাগজপত্রের দাবিতে ২৩ জুলাই থেকে ওইসব অভিবাসীরা অনশন শুরু করে। ব্রাসেলসের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি চার্চের সামনে এ অনশনের আয়োজন করা হয়। ডেইলি সাবাহ’র খবর।

অনশনকারীদের বক্তব্য, তারা এক দশক ধরে বেলজিয়ামে বসবাস ও কাজ করে আসছেন। তাদের এই সংখ্যা অন্তত ১১ দশমিক ১ মিলিয়ন বা ১১ লাখ। অনশনকারীরা পানি খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। যেকোনো সময় তাদের অবস্থা মারাত্মক হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা।

অনশনকারীদের রক্ষায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার অলিভার ডি স্কুটার এবং ফিলিপ গঞ্জালেজ বেলজিয়ামের অ্যাসাইলাম ও মাইগ্রেশন বিষয়ক সেক্রেটারি অব স্টেট সামি মাহদির কাছে একটি উন্মুক্ত চিঠি লিখেছেন।

গঞ্জালেস বলেন, 'চিঠিতে আমরা বলেছি, অনশনকারীদের ব্যাপারে যেসব তথ্য পেয়েছি তা খুবই আশঙ্কাজনক। তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। তাদেরকে বাঁচাতে হবে।'

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বেলজিয়াম সরকারের উচিত অভিবাসীদের দাবি মেনে নেওয়া। অস্থায়ীভাবে হলেও এসব অভিবাসীকে বেলজিয়ামে থাকতে দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

চিঠির জবাবে মাহদী বলেন, অভিবাসীদের পক্ষ থেকে কোনো সামষ্টিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যারা অনশন করছে তারা বিচ্ছিন্নভাবে বসবাসের অনুমতি চেয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার অভিবাসী বেলজিয়ামে অবৈধভাবে বসবাস করছে। অভিবাসীরা তাদের অবস্থানকে বৈধ করতে চাচ্ছেন, তা না হলে তাদের আশঙ্কা তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

এদিকে অভিবাসীদের আমরণ অনশন কোয়ালিশন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রোকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। গত সপ্তাহে সমাজতন্ত্রীরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেছে। ডি ক্রোর সরকারকে তারা সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।

বেলজিয়ামের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শ্রম ও অর্থবিষয়ক মন্ত্রী পিয়ারে ইভস ডারমেঞ্জ সোমবার হুমকি দিয়েছেন, অনশনকারী অভিবাসীদের কারও মৃত্যু হলে সরকার থেকে সমাজতন্ত্রী সব সদস্য পদত্যাগ করবে।