চলে গেলেন ‘লিটল মাস্টার’ হানিফ মোহাম্মদ

ক্রিকেটে যাকে দিয়ে ‘লিটল মাস্টার’ শব্দযুগলের প্রবেশ, সেই পাকিস্তানি ক্রিকেটার হানিফ মোহাম্মদ ৮১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন (ইন্না লিল্লাহি ও-ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের ইনিংসের মালিকও তিনি।

হানিফ মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। সেই সমস্যা থেকে ক্যান্সারও হয়ে যায়। সর্বশেষ তিনি করাচির আগা খান হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিস্থিতির অবনতির কারণে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছিলো। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

২০১৩ সালে হানিফ মোহাম্মদের ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় দীর্ঘ দিন লন্ডনে সেবা নেন তিনি। এরপর কিছুটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি রোগমুক্তি মিলেনি তার। টুকটাক সমস্যা সব সময়ই লেগে ছিলো। গত আট তারিখে তাকে আগা খান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৫৫টি টেস্ট খেলা হানিফ মোহাম্মদ পাকিস্তানের প্রথম টেস্টে খেলেছন। ওই দলের বেঁচে থাকা তিন সদস্যের একজন ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর বেঁচে রইলেন কেবল ইমতিয়াজ আহমেদ ও ওয়াকার হাসান। তারা উভয়েই ৮০ বছর পার করেছেন।

হানিফ তার নিখুঁত রক্ষণাত্মক কৌশলের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ৫৫ টেস্টে ৪৩.৯৮ গড়ে ৩৯১৫ রান করেন তিনি। হানিফ মোহাম্মদের সেরা ইনিংসটি ৩৩৭ রানের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৫৮ সালে বার্বাডোজে এই রান করেছিলেন তিনি।

তার অসাধারণ ওই ইনিংসটি তৎকালীণ সময়ে টেস্ট ও প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস ছিলো। যা এখনো সময়ের হিসেবে সবচেয়ে দীর্ঘ ইনিংস। ইনিংসটি খেলতে মোট ৯৭০ মিনিট সময় লাগান তিনি। ইনিংসটির কল্যাণে ফলোঅনে পড়েও টেস্ট বাঁচায় পাকিস্তান।

হানিফ মোহাম্মদ ১৯৩৪ সালে ভারতের গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেন। পরে দেশভাগের সময় অন্য চার ভাইয়ের সঙ্গে পাকিস্তান চলে যান তিনি। হানিফ মোহাম্মদরা মোট পাঁচ ভাই ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজনই টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন। কেবল রঈস মোহাম্মদ টেস্ট খেলতে পারেননি। তবে একবার দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তান দলে ছিলেন।

পাকিস্তানের প্রথম ১০১ টেস্টে হানিফ মোহাম্মদের কোনো না কোনো ভাই খেলেছেন। তার ছেলে সোহাইব ৪৫টি টেস্ট খেলেছেন। তার নাতি শেহজার খেলেছেন ৩০টি প্রথম শ্রেনির ম্যাচ। ২০১০ সালে ক্রিকেট বিষয়ক এক নম্বর সংবাদ মাধ্যম ক্রিকইনফোর সর্বকালের সেরা পাকিস্তান দলে সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে জায়গা পান হানিফ মোহাম্মদ।

ক্রিকেট ছাড়ার পর ১৯৭২ সালে ক্রিকেটার্স পাকিস্তান নামে একটি পত্রিকায় কাজ শুরু করেন হানিফ। দুই দশকের বেশি সময় ধরে পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। হানিফ মোহাম্মদের মৃত্যুতে পাকিস্তান ক্রিকেটে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুর মাধ্যমে বিশ্ব ক্রিকেটও হারালো এক নক্ষত্র।

আপনি আরো পড়তে পারেন

অস্ত্রপচারের টেবিলে মুস্তাফিজ, প্রধানমন্ত্রীর ফোন

সর্বকালের সেরা টি-টোয়েন্টি দলে বাংলাদেশের দুজন

নতুন দায়িত্বকে ‘চ্যালেঞ্জ’ মনে করছেন আতহার

সিংহের ‘সাথে’ ছবি: রবিন্দ্র জাদেজার জরিমানা

দেশে ফিরেই অনুশীলনে যোগ দিলেন চান্দিকা