খরুচে সাকিবে ম্লান কৃপণ মোস্তাফিজ

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ গত শুক্রবারই জিতে নিয়েছিল সিরিজ। শনিবারের ম্যাচ তাই কাগজে-কলমে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। কিন্তু ম্যাচের রঙ যেভাবে ক্ষণে ক্ষণে পাল্টেছে, তাতে এই লো-স্কোরিং ম্যাচেও জয় না পাওয়ার আক্ষেপ রয়ে গেছে বাংলাদেশীদের অন্তরে। মোস্তাফিজের বোলিংয়ে যেমন সবার মুখে চওড়া হাসি ফুটেছে, তেমনি সাকিবের বোলিংয়ে রয়ে গেছে আফসোস। যদি সাকিবের সেই ওভারটি অন্যরকম হতো। সেই সাথে আক্ষেপ, রান যদি আর বিশটিও বেশি হতো। হয়তো বাংলাদেশ এ ম্যাচটিও জিতে যেত। নাকউঁচু অজি দলকে বাংলাওয়াশের দিকে নিয়ে যাওয়া যেত।

দিনটি ভালো যায়নি সাকিবের

সাকিব আল হাসানকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস রচনা করা সম্ভব নয়। ২০০৬ সালের আগস্টে দেশের হয়ে প্রথম ক্যাপ মাথায় দেন সাকিব। একই বছরের ২৭ নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তার। তার দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে, দলের হয়ে অসংখ্যবার স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। আবার কখনো হয়তো নিষ্প্রভ হয়ে সমালোচনা কুড়িয়েছেন।

শনিবার (৭ আগস্ট) ছিল তার জীবনের সে রকম ভুলে যেতে চাওয়ার মতোই একটি দিন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ১৫ রান করলেও বলের হিসেবে তা একটু ব্যয়বহুলই ছিল বটে। ২৬ বল খেলে ৫৭ দশমিক ৬৯ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেন। তাই আশা ছিল বল হাতে কিছু একটা করবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু দিনটি সাথে ছিল না তার। বোলিংয়ে এসে বাংলাদেশ টিমের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞ এই বোলার বেধড়ক মার খান। নিজের চার ওভারের কোটা পূরণ করতে গিয়ে খরচ করেন ৫০ রান। উইকেট পাননি একটিও।

২০ ওভারের খেলায় খুবই কৃপণ হয়ে উঠছেন মোস্তাফিজ

তাকে সবচেয়ে বেশি অপ্রস্তুত করেন অজি দলের ডেল ক্রিস্টিয়ান। লোয়ার অর্ডারে খেলা এ অজি ব্যাটারকে পাঠানো হয় তিন নম্বরে। ব্যর্থ হয়নি এমন অদলবদল। সাকিবের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ৫টি ছক্কায় ত্রিশ রান তুলে নেন তিনি। এ ধাক্কায় তার চার ওভারেরর ইকোনমি রেট ছিল ১২ দশমিক ৫০। যেখানে দলের অন্য বোলারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইকোনমি রেট ছিল চার দশমিক ২৫। সাকিবের ১৫ বছরের দীর্ঘ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড। দুর্ভাগ্য এদিন বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল একেবারেই কম, মাত্র ১০৪। ফলে সাকিবের চার ওভারেই ম্যাচটি অজিদের পকেটে চলে যায়।

এদিন টাইগারদের মধ্যে সর্বোচ্চ কৃপণ বোলার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। শনিবারের ম্যাচে মাত্র ২ দশমিক ২৫ ইকোনমি রেটে চার ওভারে রান দেন মাত্র ৯টি। এর মধ্যে একটি ওভার মেডেনও ছিল। এই চার ওভারে তিনি পেয়েছেন দুটি উইকেটও। আগের দিনের মতোই এদিনও মোস্তাফিজকে পড়তে পারেননি অজি ব্যাটাররা। গত শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও তিনি চার ওভার করতে খরচ করেছিলেন ৯ রান। তবে সেদিন কোনো উইকেটের দেখা পাননি।

লো-স্কোরিং ম্যাচটা জেতা হয়নি বাংলাদেশের। কিন্তু ক্ষণে ক্ষণে যে চমক সৃষ্টি হয়েছিল তাই তো ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য। সেটাই শনিবার উপভোগ করেছে ক্রিকেটমোদিরা।