গান্ধীকে উদারভাবে সাহায্য করেছিল মুসলমানরা

ভারতের স্বাধীনতা আইকন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ওরফে মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, তার জন্ম ভারতে, কিন্তু তৈরি হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেই আফ্রিকায় তার জীবন মসৃণ ছিল না। কঠিন সেই সময়ে তাকে উদারভাবে সাহায্য করেছিল সেখানকার মুসলিম পরিবারগুলো। গতকাল শনিবার মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকীতে এ কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী সাবের আহমেদ জাযভাই।

পরিণত বয়সে মহাত্মা গান্ধী

শীর্ষস্থানীয় এই আইনজীবী বলেন, গান্ধী ১৮৯৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছিলেন এবং কিছু সময়ের মধ্যেই ভারতীয় সম্প্রদায়ের নেতা হয়ে ওঠেন। ১৯১৪ সাল পর্যন্ত আইনজীবী ও অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে কাজ করেন। সে সময়ের কথা বলতে গিয়েই গান্ধী বলেছিলেন, তিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় তৈরি হয়েছিলেন।

নাটাল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় তার কার্যক্রম পরিচালনার সময় মুসলিম পরিবারগুলো গান্ধীকে থাকার সুবিধা এবং অর্থায়নের মাধ্যমে সাহায্য করেছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে আইনজীবী সাবের আহমেদ জাযভাই বলেন, সে সময় মুসলিম ব্যবসাগুলো উপনিবেশিক নিপীড়ন ও বর্ণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ অবস্থায় গান্ধী শুধু দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের প্রভাবিত করেননি বরং তার দর্শন দ্বারা সমস্ত জাতি প্রভাবিত হয়েছিল। কারণ তিনি দেখিয়েছিলেন, সহিংসতার বিকল্প আছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় মহাত্মা গান্ধীর আবক্ষ মূর্তি

তিনি বলেন, গান্ধী ১৯০৬ সালে জোহানেসবার্গে থাকাকালীন অহিংস আন্দোলন শুরু করেছিলেন। জোহানেসবার্গে জমি ও ব্যবসা সংক্রান্ত একটি বিবাদ সম্পর্কে মুসলিম পরিবারের মালিকানাধীন দাদা আব্দুল্লাহ ব্যবসায়িক সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তরুণ গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

‘নাটাল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় তার কার্যক্রম পরিচালনার সময় মুসলিম পরিবারগুলো গান্ধীকে বিভিন্নভাবে প্রাণখুলে সাহায্য করেছিল। যারা গান্ধীকে সাহায্য করেছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, তারা যেন ঠিকমতো সামাজিক ন্যায়বিচার পায়।’ বলেন ওই শীর্ষ আইনজীবী।

উপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করায় অনেক আফ্রিকান নেতা গান্ধী ও তার দর্শনের প্রশংসা করেছেন। তবে অনেকে আবার তাকে ‘বর্ণবাদী’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তারা বলছেন, গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের অধিকার নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন।