একলাফে রেমিট্যান্স কমেছে ২০ শতাংশ

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যেও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে একের পর এক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। গেল অর্থবছরে (২০২০-২১) এই খাতে ক’দিন পর পরই মাইলফলক স্পর্শের কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই অর্থবছরের শেষ মাস, জুনেই প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে, যা গত চার মাস ধরে অব্যাহত রয়েছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ, ফাইল ছবি

ধারাবাহিকভাবে প্রবাসী আয় কমতে থাকার বড় ধরনের প্রভাব লেগেছে গত মসে। সেপ্টেম্বরে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই হার কমেছে ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, গতমাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার, গেল বছরের এই সময়ে ছিল ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। সে হিসেবে ৪২ কোটি ৪৮ লাখ ডলার প্রবাসী আয় কমেছে এবার এক মাসেই, যা ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর আগে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস, আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮১ কোটি ডলার। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৯৬ কোটি ডলার। হিসাব অনুযায়ী, এবার আগস্টে প্রবাসী আয় কমে প্রায় ৮ শতাংশ।

করোনায় বিপাকে সৌদি প্রবাসীরা, ফাইল ছবি

তার আগের চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম মাস, জুলাইয়ে রেমিট্যান্স বাবদ দেশে এসেছে ১৮৭ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশের বিদেশি আয় কমে সোয়া ৩ শতাংশ। এ ছাড়া গেল অর্থবছরের শেষ মাস, জুনে ১৯৪ কোটি ডলার প্রবাসী আয় হয়েছে। ওই মাস থেকেই এই ধারা উল্টো দিকে ঘুরতে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৮০৩ কোটি ডলার। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ বেশি।

অবশ্য, গত ৮ আগস্ট রেমিট্যান্স খাতের ‘জাদু’ শেষ হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত বৈদেশিক খাতে ভাঙন ধরেছে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে- আগের চেয়ে মানুষ বিদেশে গেছে কম, দেশে ফিরেছে বেশি। রপ্তানির ক্ষেত্রে আগের অবস্থানে আবারো ফিরে যাবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।