এমপি মোকতাদির: ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে হেফাজতের নির্দেশে

হেফাজতের নির্দেশে চলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রশাসন। হেফাজত নেতারা অনেক মন্ত্রী, এমপির কাপড়ের নিচে থাকেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এই মন্ত্রী-সেই মন্ত্রীর প্রশ্রয় পান। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে এসব মন্তব্য করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী কোনো কাজের নয়। তা না হলে আসামি যারা রয়েছে, এখনো গ্রেপ্তার হয়নি কেন?

শ্রমিক লীগের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে জেলা শ্রমিক লীগের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এমপি মোকতাদির বলেন, আমি এসব কথা প্রকাশ্যে বলছি। পারলে কেউ এসে আমাকে চ্যালেঞ্জ করুক। ডিসি-এসপি তো আপনাদের সঙ্গেই আছেন। আমি তাদের সামনে বসে এ কথা বলতে রাজি আছি।

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যদেরও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দেখতে এলেন না। ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর হলো কিন্তু এমপিরা কোনো খোঁজ নিলেন না। এমনকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের হামলার সময় স্থানীয় অনেক নেতা পালিয়ে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, জেলায় ছয়জন এমপি আছেন, মহিলা এমপি আছেন কয়েকজন। একজন এমপি, মন্ত্রীও হেফাজতের ঘটনায় নিন্দা জানাননি। তারা এসে সবকিছু পুড়িয়ে দিল। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য সবাই জীবন দিতে প্রস্তুত, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙেছে। আপনি কী করেছেন বা আমি কী করেছি!

দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলাউদ্দিন আলাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, সহসভাপতি মুজিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক চৌধুরী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকার বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতা চালায় হেফাজতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এসব ঘটনায় হেফাজতের শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জানিয়ে আসছেন মোকতাদির চৌধুরী।