স্কটল্যান্ড-ওমানের পিঠ চাপড়ে দিলেন সাকিব

কদিন আগেই আরব আমিরাতে শেষ হয়েছে আইপিএল। সাকিব আল হাসানের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের চতুর্থ শিরোপা জিতেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। তবে দল ফাইনালেও উঠলেও আসরটা একদম বাজে কেটেছে সাকিবের।

সাকিব আল হাসান

আইপিএল অংশের ভারত পর্বে তিন ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু আরব আমিরাত অংশে ম্যাচের পর ম্যাচ উপেক্ষিত থাকতে হয়েছে সাকিবকে। অনেক বিতর্কের পর সাকিবকে ফেরানো হয়েছে একাদশে। তার ফেরার প্রথম তিন ম্যাচেই দল জিতেছে। হেরেছে কেবল ফাইনালে।

চারটি ম্যাচের একটিতে দলের জয়ে কিছুটা ভূমিকা রেখেছেন সাকিব। বাকি তিনটি ম্যাচের একটিতে ছিল সাদামাটা বোলিং। আর দুই ম্যাচে পারফর্ম হয়েছে বাজে রকমের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচেও হতাশ করেছেন সাকিব। বল হাতে ভালো করলেও প্রস্তর যুগের ব্যাটিংয়ে শিকার হয়েছেন প্রবল সমালোচনার।

দুঃসময়কে জবাব দিতে সাকিব বেছে নিয়েছেন ওমানকে। মঙ্গলবার মাস্কাটের আল আমিরাত স্টেডিয়ামে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুই বিভাগেই জ্বলে উঠেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে হয়েছেন রান আউট। বল হাতে ২৮ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট।

তন্মধ্যে একটি ছিল ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জতিন্দ্রর সিংয়ের উইকেট। ৪০ রান করা ওমান ওপেনারকে ফিরিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন সাকিব। এর আগে-পরে শিকার করলেন আরো দুটি। সবমিলিয়ে এদনি পারফেক্ট সাকিবের দেখা মিলল। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে প্রায় হারতে বসা ম্যাচে বাংলাদেশ জিতল ২৬ রানে।

প্রত্যাশিতভাবেই সাকিব হলেন ম্যাচ সেরা। জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ওমানের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন তিনি। সাকিব বলেছেন, 'ওমান ভালো খেলেছে। ৪০ ওভারের ম্যাচে বেশিরভাগ সময় তারা ম্যচে ছিল। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা আমাদের চাপে রেখেছে কিন্তু আমরা স্নায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।'

ম্যাচটা জিততে বাংলাদেশকে কতটা বেগ পেতে হয়েছে তা সাকিবের কথাতেই পরিষ্কার। সাকিবের মতে অভিজ্ঞতাই গড়ে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য, 'অভিজ্ঞতার কারণে আমরা জিততে পেরেছি। এই জয়টা আমাদের স্নায়ু নিয়ন্ত্রণে রাখছে। আমাদের আরেকটি ম্যাচ আছে। পিএনজির বিপক্ষে জিততে হবে। এরপর দেখা যাক কী হয়।'

'কী হয়' বলতে একটা সমীকরণের দাঁড়ানোর আশঙ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছেন সাকিব। কারণ পরের ম্যাচে পিএনজিকে হারালেই চলবে না। তাকিয়ে থাকতে হবে স্কটল্যান্ড ও ওমান ম্যাচের দিকে। তবে পিএনজিকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে বাংলাদেশকে কোনো সমীকরণে যেতে হবে না। এক্ষেত্রে ওমান বা স্কটল্যান্ডের একদল বাদ পড়বে।

ঝামেলা পাকবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ওমান জিতলে। কারণ এই মুহূর্তে রান রেট তিনটি দলেরই প্রায় কাছাকাছি। ওমান হারলে এবং বাংলাদেশ জিতলে কোনো সমীকরণের দরকার পড়বে না। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে স্কটল্যান্ড। রানার্সআপ হিসেবে 'সুপার টুয়েলভ'-এ উঠবে বাংলাদেশ। তবে ওমান জিতলে এবং পিএনজিকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে গ্রুপ সেরা হওয়ার সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের।

শেষ ম্যাচে তাই টাইগারদের জিতলেই চলবে না। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের দিকে। এমন অবস্থায় যে পড়তে হবে সেটা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেনি কেউ। স্কটল্যান্ড ম্যাচের হারটাই যতো সমীকরণে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে। সাকিব কৃতিত্ব দিলেন স্কটিশদেরও, 'এটা (স্কটল্যান্ডে ম্যাচে হার) এটা পুরো দলকে কষ্ট দিয়েছে। আমরা এটা আশা করিনি। কিন্তু স্কটল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসী ছিল।'