ইলিশ ধরতে প্রস্তুত জেলেরা

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে দেশের জাতীয় মাছটি রক্ষায় আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ, ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর, আজ সোমবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ ২২ দিন পর আবারো ইলিশ ধরতে প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন জেলেরা। উল্লিখিত সময়ে সারাদেশে ইলিশ আহরণ, মজুত, বাজারজাতকরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় এবং বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল।

ইলিশ ধরতে প্রস্তুত জেলেরা, ফাইল ছবি

জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে দেশের ৬টি অভয়াশ্রমসহ চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনায় ইলিশ ধরবেন জেলেরা। ইতোমধ্যে মাছ ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাঁদপুরের ৪৪ হাজারের বেশি জেলো।

মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, টাস্কফোর্স গঠিত কমিটি মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিদিন দিন ও রাতে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ ও কোস্ট গার্ড যৌথ এবং পৃথকভাবে এ পর্যন্ত ২৭৮টি অভিযান এবং ৯৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে।

সূত্র বলছে, এসব অভিযানে জব্দ করা হয়েছে ১০৮ কোটি মিটার জাল। মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২১৮ জন জেলেকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ সময় জরিমানা ও নিলাম থেকে ১৯ লাখ টাকা আয় হয়েছে। পাশাপাশি অভিযান পরিচালনার সময় ১ হাজার ১২৪ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়। অভিযানকালে ১০৮টি মামলা দায়ের করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী বলেন, পদ্মা-মেঘনায় যাতে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত হয় সেজন্য ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। এ সময় নিষিদ্ধ ছিল ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন।

ইলিশের এ প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় চাঁদপুরের প্রায় ৪৪ হাজারের বেশি জেলেকে ভিজিএফের চাল দেওয়া হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসস্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে ১১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল জেলেদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৩৭ জেলার ১৫১টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৪টি জেলে পরিবারের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।