কম সংক্রমণেও নতুন শঙ্কা, আসতে পারে কড়াকড়ি!

প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার সম্প্রতি যথেষ্ট কমে এসেছে। এখন ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ২০০ ও ১০ জনের নিচে নেমে এসেছে। এমন অবস্থাতেও সীমান্তবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ বাড়ায় নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে।

করোনা পরীক্ষার সারি, ফাইল ছবি

জনস্বাস্থ্যবিদদরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িসহ কয়েকটি জেলার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর ফলে সীমান্ত পারাপার করা মানুষের মাধ্যমে সংক্রমণ ফের বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরেও করোনা আক্রান্তের হার অনেক কমে আসায় স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকে। এই অবস্থা আসন্ন শীত মৌসুমেও অব্যাহত থাকলে সংক্রমণ আবারো বেড়ে যেতে পারে। এভাবে দেশে তৃতীয় ঢেউ আসলে স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক অবস্থায়ও বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে, বলছেন তারা।

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবাইকে টিকা দেয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা উচিত। নিয়ম তো মানতে হবেই। এসব বিষয়ে উদাসীনতা খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। সে জন্য কয়েক দিনের মধ্যেই জাতীয় পরামর্শক কমিটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। সেখান থেকে উদ্বেগের কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানায় কড়াকড়ি আরোপসহ পরামর্শ দেয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সরকারের আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, দেশের এই দীর্ঘ সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে সীমান্ত পারাপার কমাতে হবে।

সীমান্ত পার হওয়াদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, আক্রান্তদের অনেকের উপসর্গ বোঝা যায় না অনেক সময়। আক্রান্ত কেউ দেশে ঢুকে পড়তে না পারে, সেজন্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, কোয়ারেন্টাইন জোরদার করা এবং তাপমাত্রা দেখার উন্নত ব্যবস্থা প্রয়োজন।

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তর গত বুধবার জানায়, রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৭৬ জনের শরীরে, মারা গেছে ১৫ জন। আক্রান্তের ক্ষেত্রে কলকাতায় ২৭২, উত্তর চব্বিশ পরগনায় ১৫৯, হাওড়ায় ৭৯, হুগলিতে ৭৩, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ৭৯, নদিয়ায় ৪৫, দার্জিলিংয়ে ৩২ ও জলপাইগুড়িতে ২৫ জন রয়েছে। দুর্গাপূজার কারণে সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।