নেতৃত্ব বোর্ডের বিষয়, অবসরের ভাবনা নেই মাহমুদউল্লাহর

প্রত্যাশা ছিল পাহাড়সম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দলের ওপর প্রত্যাশা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু চাপের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অ্যান্ড কোং। আসরে সুপার টুয়েলভের পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছেন তারা। মূলপর্বে উঠতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে দলকে।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ

শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আশা জাগিয়েও হেরেছে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভের বাকি তিন ম্যাচে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। সবশেষ দুই ম্যাচে তো লজ্জাজনক হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাহমুদউল্লাহদের। এই ভরাডুবির দায় নির্দিষ্ট কারোর নয়।

আসরজুড়ে বাংলাদেশ দলকে ভুগতে হয়েছে বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে। বোলিংটাও ঠিকঠাক হয়নি। ফিল্ডিংয়ের কারণে তো দুই দুটো ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিতর্ক উঠেছে খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়ে। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের।

আজ শেষ ম্যাচে তো নড়বড়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পরিণতি হলো। টি-টোয়েন্টি সংস্করণ ও বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে গেছে টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫ ওভারে ৭৩ রানে অল আউট হয়েছে দল। এরপর দ্রুততম সময়ে হারের বিব্রতকর রেকর্ড গড়েন মাহমুদউল্লাহরা।

দুই উইকেট খুইয়ে মাত্র ৩৮ বলেই দারুণ জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। খুব স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়কের ওপর চাপটা পাহাড়সম। আজ শেষ ম্যাচে সাংবাদিক বৈঠকে বিধ্বস্ত হয়েই হাজির হলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বাজে পারফরম্যান্স তো আছেই, প্রশ্ন উঠেছে মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্ব নিয়ে।

এমনকি অবসর প্রসঙ্গও উঠল সংবাদ সম্মেলনে। সাংবাদিকদের একের পর এক বাউন্সারে অধিনায়ক কেবল ডিফেন্সই করলেন। উত্তরে নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ওপর ছেড়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। আর অবসর নিয়ে আপাতত ভাবছেন না তিনি।

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, 'এটা (অধিনায়কত্ব ছাড়া) নির্ভর করে ক্রিকেট বোর্ডের ওপর। এটা আমার হাতে নেই। আমার তরফ থেকে আমি চেষ্টা করেছি এই দলটাকে আগলে রাখতে। ভালো পারফরম্যান্স আদায় করার জন্য চেষ্টা করেছি। পদত্যাগের বিষয়টি ক্রিকেট বোর্ডের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।'

মাহমুদউল্লাহ আরো বলেছেন, 'এই মুহূর্তে আমি ওই রকম (অবসরের) কোনো চিন্তা করছি না। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলটা যে অবস্থায় ছিল... বিগত সিরিজগুলোয় আমরা একটা ম্যাচ জিতেছি তো পরের ম্যাচে ধারাবাহিকতা পেয়েছি। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে আমরা সেই ধারাবাহিকতাটা পাইনি।'

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিভাগ। এটা মানছেন অধিনায়কও, 'শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিতলে হয়তো ধারাবাহিকতা পেতাম। কিন্তু এখন এসব কথা বলেও লাভ নেই। বিশেষ করে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি তা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো না। সামনে পাকিস্তান সিরিজ আছে, সেখানে অনেক কিছুই বদলাতে হবে।'

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এই মুহূর্তে সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল হলেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্স শিশুতোষ। বিশেষ করে এই ফরমেটে বেশি ভুগতে হচ্ছে দেশের বাইরে। মাহমুদউল্লাহ স্বীকার করলেন, 'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনও আমরা পায়ের মাটি খুঁজছি। ঘরের মাঠে ভালো খেলছি। কিন্তু বাইরের কন্ডিশনে সেরা দলগুলোর সঙ্গে খেলার জন্য আমাদের কতটা উন্নতি করতে হবে সেটা বুঝতে পারছি।'