কোচদের সমস্যা দেখছেন না টাইগার অধিনায়ক

ব্যর্থতার ষোলো কলা পূরণ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কোনোরকম বাছাইপর্বের গণ্ডি পাড়ি দিলেও মূলপর্বে এর ধকল পোহাতে হলো টাইগারদের। সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে হেরে আগামীকাল শুক্রবার রিক্ত হস্তে দেশে ফিরছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অ্যান্ড কোং।

কোচদের পাশে মাহমুদউল্লাহ

কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে কার্যত সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল বাংলাদেশ। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বকাপে এই দলটাকে নিয়ে প্রত্যাশার বেলুন উড়িয়েছিলেন ভক্তরা। কিন্তু প্রত্যাশার চাপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে টাইগাররা। আসরে ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং কোনোটিতেই প্রত্যাশার ছাপ রাখতে পারেনি দল।

প্রশ্ন উঠেছে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ও মানসিকতা নিয়ে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বও ছিল না সমালোচনার বাইরে। অধিনায়ক হিসেবে দলের এই ভরাডুবির দায় এড়াতে পারেন না তিনি। আজ দুবাইতে ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে নিজের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। জানালেন নির্মম অভিজ্ঞতার কথা।

কোচদের পাশে মাহমুদউল্লাহ

এই ভরাডুবির দায় বর্তাচ্ছে বাংলাদেশের কোচিং বিভাগের ওপরও। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক আরো উসকে দিয়েছেন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অথচ দলের এমন হতশ্রী অবস্থার মধ্যেই প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে অন্তত আরো এক বছর রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বাংলাদেশের কোচিং ইউনিটের বেশির ভাগ দক্ষিণ আফ্রিকান। মাশরাফির মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকানদের 'পুনর্বাসন সংস্থা'! তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন দেশের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। খেলোয়াড়দের সঙ্গে ডমিঙ্গোর নেতৃত্বাধীন কোচিং বিভাগকেও তাই দাঁড়াতে হচ্ছে কাঠগড়ায়।

যদিও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ কোচদের কোনো সমস্যা দেখছেন না। কঠিন বিপর্যয়ের সময় গুরুদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, 'খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। কোচ রাখার বিষয়টি পুরোটাই বোর্ডের ওপর। আমি কেবল মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে পারি।'

অধিনায়ক যোগ করেন, 'স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর এবং ওমানের বিপক্ষে যেভাবে জিতলাম তা নিয়ে আমি একটুও খুশি ছিলাম না। আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে পারি। দায়িত্ব কার থাকবে বা থাকবে না সেটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। প্রতিটা কোচের ভিন্ন মতাদর্শ থাকে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।'

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে বাংলাদেশ দল যথেষ্ট উন্নতি করেছে। লঙ্কান কোচের বিদায়ের পর স্টিভ রোডসের অধীনেও ভালো করেছে দল। ইংলিশ কোচের অধীনে গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। অথচ এই আসরে মূলপর্বের সব ম্যাচ হারার পরও বোর্ড আস্থা রাখছে ডমিঙ্গোর ওপর।

প্রসঙ্গটা উঠল সংবাদ সম্মেলনে। মাহমুদউল্লাহ মানছেন, লঙ্কান কোচ হাথুরু একটু কড়া শিক্ষক ছিলেন। সেই তুলনায় ডমিঙ্গো কোমল প্রকৃতির মানুষ। ট্রেডমার্ক হাসি দিয়েই শিষ্যদের আগলে রাখেন তিনি। খুব সম্ভবত এ কারণেই কোচদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। তার কথার ইঙ্গিত সেদিকেই, 'হাথুরু বকাঝকা করতেন খারাপ করলে। কিন্তু ডমিঙ্গো অমন প্রতিক্রিয়া দেখান না। এটা কোচদের নিজস্ব বিষয়।'