উইন্ডিজের এক যুগের সমাপ্তি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একমাত্র দল হিসেবে দুবার ট্রফি জিতেছে ক্যারিবীয়রা। টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও তারা। এবারো শিরোপা দৌড় থেকে একেবারে ছিটকে দেয়া হয়নি তাদের। এর কারণ একঝাঁক তারকার উপস্থিতি।

ক্রিস গেইল ও ব্রাভো

এবারের আসরে অংশ নিয়েছে ১৬টি দল। তন্মেধ্যে সবচেয়ে বেশি পেশীশক্তির ব্যাটার উইন্ডিজের। এই দলটায় ছিলেন ক্রিস গেইল, কাইরেন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, এভিন লুইস, জেসন হোল্ডার, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরান, ডোয়াইন ব্রাভো, লেন্ডল সিমন্সের মতো বিধ্বংসীরা।

অথচ এমন তারকাঠাসা দল নিয়ে সুপার টুয়েলভের পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বড় দলগুলোর মধ্যে সবার আগে তারাই ছিটকে গেছে বিশ্বকাপ থেকে। আসলে উইন্ডিজের অবস্থা হয়েছে অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্টের মতো। ফ্লপ গেলেন প্রায় সবাই।

এদের মধ্যে কয়েকজনের আবার এটাই ছিল শেষ বিশ্বকাপ। ক্রিস গেইল, লেন্ডল সিমন্স, ডোয়াইন ব্রাভোদের কথা আলাদা করেই বলতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রাভো এবং গেইল মেরুন জার্সিতে তাদের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন। অপেক্ষা এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। যেকোনো সময় আসতে পারে তা।

গেইল-ব্রাভো অবশ্য আগেও অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু দলের স্বার্থে অবসর ভেঙে ফিরে এসেছেন। তাদের ফেরাটা সুখের হয়নি। আসরজুড়ে নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছেন তারা। পাঁচ ম্যাচে ২৬ রান করেছেন ব্রাভো। সর্বোচ্চ ১০ রান করেছেন শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এই বিশ্বকাপে দুই উইকেট নিয়েছেন তিনি।

আসরটা সুখের হয়নি গেইলেরও। পাঁচ ম্যাচে ৪৫ রান করেছেন বাঁ-হাতি ওপেনার। শেষ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে ১৫ রান করেছেন তিনি। ওই ম্যাচে দুটি ছক্কা মেরে জ্বলে ওঠার আভাস দিয়েও নিভে যান গেইল। আউট হওয়ার পর ব্যাট-প্যাড উঁচিয়ে দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দেন তিনি।

ডাগ আউটে গিয়ে সতীর্থদের আলিঙ্গনেও বাঁধা পড়েন। খণ্ড খণ্ড ছবিগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা খেলে ফেলেছেন গেইল। কিন্তু এই রহস্য খোলাসা করেছেন তিনি। গেইল জন্মভূমি জ্যামাইকাতে আরো একটা ম্যাচ খেলতে চান। অবসর নিতে চান ঘর থেকে।

গেইল অবসর নেন বা না নেন বিশ্বকাপ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটা যুগের অবসান হলো। টি-টোয়েন্টির সবকটি আসরে যে সাতজন ক্রিকেটার খেলেছেন তাদের দুজনই উইন্ডিজের। আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে তাই আর দেখা যাবে না গেইল ও ব্রাভোকে। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধ্যায়ে শেষ হলো একটা যুগের। অপেক্ষা নতুন যুগের।